ফেসবুক চালু করছে তাদের ডিজিটাল মুদ্রাব্যবস্থার, যার নাম ক্রিপ্টোকারেন্সি। আজ মঙ্গলবার ফেসবুক তাদের ক্রিপ্টোকারেন্সি ‘লিবরা’ চালুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ ‘লিবরা’ চালুর ঘোষণা দিলেন তার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে। এ বছরের প্রথম দিকেই ক্রিপ্টোকারেন্সি আকারে রেমিট্যান্স সার্ভিস চালুর ইঙ্গিত দেয় বিশ্বের সর্ববৃহৎ সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম। লিবরার মাধ্যমে ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীরা একে অপরের সঙ্গে খুব সহজেই অর্থ লেনদেন এবং কেনাকাটা করতে পারবেন।
গত বছরের ডিসেম্বরেই মূলত খবরটি ছড়ায়। নতুন বছরের শুরুতেই এ কর্মযজ্ঞকে সামনে রেখে নতুন কর্মী নিয়োগ দেয় তারা। কলেবরে বাড়ানো হয় তাদের ক্রিপ্টোকারেন্সি দল। ফেসবুক লন্ডন-ভিত্তিক নতুন প্রতিষ্ঠান চেইনস্পেস-কে নিজের করে নেয়ারও ঘোষণা দেয় তারা।
জাকারবার্গ জানান, লিবরা হবে একটি সহজ অর্থব্যবস্থা। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ ব্যবহার করে উপকৃত হবেন। ব্লক চেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই ভার্চুয়াল মুদ্রাটি ২০২০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে।
ফেসবুকের এমন আয়োজনে রীতিমতো উত্তেজিত বিনিয়োগকারীরা। ক্রিপ্টোকারেন্সির দুনিয়াটা উদীয়মান। এই ব্যবসার গুরুত্ব অনেকটা ফেসবুকের আগমনের ওপর নির্ভর করে। আন্তর্জাতিক বাজারে উন্নয়নের জন্যে ‘ফেসবুক কয়েন’ এবার নজর কাড়বে বলেই বিশ্লেষকদের মত। মূলত ফেসবুকের ক্রিপ্টোকারেন্সি এজেন্ডা উদারপন্থী অর্থব্যবস্থাকে বাস্তবায়ন করবে। আর এর উত্থান বুঝতে রেমিট্যান্সব্যবস্থাকে জানতে হবে।
ইতোমধ্যে বিশ্বের বড় বড় সব আর্থিক লেনদেন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য গ্রাহকসেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ফেসবুকের সঙ্গে ক্রিপ্টোকারেন্সি ‘লিবরা’ বিষয়ে চুক্তি করে ফেলেছে। এ তালিকায় মাস্টারকার্ড, ভিসা, পেপ্যাল, স্ট্রাইপ, ইবে, উবার, লিফ্ট, স্পোটিফাই, কয়েনবেস, জ্যাপো, আন্দ্রেসেন হোরোউইটজ, বুকিং ডটকম, ভোডাফোন রয়েছে। এসব কম্পানিসহ মোট ১০০টি প্রতিষ্ঠান ‘লিবরা অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের অধীনে থেকে ফেসবুকের ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ন্ত্রণ করবে।
এর আগে ২০১৪ সালেও ফেসবুক কার্যকর রেমিট্যান্স ব্যবস্থার দিকে সামান্য ইঙ্গিত দিয়েছিল। এ কাজে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এগিয়ে আসার কাজে উৎসাহ দেয় বিশ্ব ব্যাংক। তাছাড়া রেমিট্যান্স পাঠানোর বাজারটি সম্প্রসারণশীল। এ ব্যবসা থেকে লাভ আসে।
‘ইকোনমিক মাইগ্রেসন’ থেকে রেমিট্যান্সের ধারণা আসে। প্রাপকের কাছে অপ্রাতিষ্ঠানিক কমিউনিটি কিংবা ওয়েস্টর্ন ইউনিয়ন বা মানিগ্রামের মতো প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থ প্রেরণ করা হয়। অতি সাম্প্রতিক ব্যবস্থা হিসেবে মোবাইল পেমেন্ট সার্ভিসের কথা বলা যায়। আসলে অর্থ মজুরি হিসেবে এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমণ করে। এই ইকোনমিক মাইগ্রেশনের মাধ্যমে লভ্যাংশ বের করে আনবে ফেসবুক। সেইসঙ্গে এ বাণিজ্য দুনিয়ায় কলোনিয়াল শক্তি হিসেবেও আবির্ভূত হবে তারা। অর্থব্যবস্থায় বড় ধরনের উন্নয়নের প্রচেষ্টা থাকা দরকার। রেমিট্যান্স লেন-দেনে প্রাইভেট খাতের আগমনে নির্ভরশীলতাও বৃদ্ধি পাবে। ফেসবুকে এ খাতে এসে প্রাইভেটাইজেশন ঘটাচ্ছে। অর্থব্যবস্থায় নিজেদের অপরিহার্য প্লাটফর্ম হিসেবে দাঁড় করাচ্ছে তারা।