ডিএমপি নিউজঃ রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানা এলাকা থেকে ই-কমার্স ভিত্তিক তিনটি প্রতারক চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। এ সময় প্রতারণায় ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার (১৩ ডিসেম্বর, ২০২০) রাত ১০.১৫ টায় কামরাঙ্গীরচরের পশ্চিম রসুলপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম।
গ্রেফতারকৃতরা হলো-রকি বিশ্বাস (২৫), মোঃ হেকমত আলী (২৭), মোঃ কচিবুর রহমান (২২), শিমুল মন্ডল (২৭), মোঃ আনিছুর রহমান শেখ (২৯) ও মোঃ মাজহারুল ইসলাম (২৪)।
গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত এসএ পরিবহন পার্সেল এন্ড কোচ সার্ভিসের বুকিং মেমো ২০২টি, পণ্য বিক্রয়ের ক্যাশ মেমো ১১৭টি, ৪৬ জোড়া বিভিন্ন রংয়ের ব্যবহারের অযোগ্য জুতা, ১০টি চার্জার, ০১টি ল্যাপটপ, ১৫টি বিভিন্ন পণ্যের বুকিং ফেরতযোগ্য বক্স, ১২টি বিভিন্ন মডেলের ব্যবহারের অযোগ্য মোবাইল ফোন ও ব্যবহারযোগ্য ১৪টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
সোমবার বিকাল ৩:৩০ টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার বিপিএম-বার।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা ছদ্মনামে ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে দারাজ অনলাইন, দারাজ অনলাইন ৭১, দারাজ অনলাইন সপ, দারাজ এক্সপ্রেস, দারাজ অনলাইন বিডি, ফ্যাশন জোন, গ্যালাক্সী ২৪, অনলাইন মোবাইল গ্যালাক্সী, শপিং সেন্টার নেট, শপিং জোন বিডি, শপিং ডেলস, স্মার্ট সপ বিডি, উইনটার কালেকশন, সোনিয়া ফ্যাশন হাউজ, সু বাজার ডট কম, ফ্যাশন হাউজ ২৪, চায়না ফ্যাশন বিডি ও বিডি ফ্যাশন সপসহ অনলাইন শপিংয়ের নামে একাধিক পেজ খুলে। উক্ত পেজে অনলাইন শপিংয়ের নামে ভালো মানের মোবাইল ফোন, জুতা, ঘড়ি, থ্রি-পিস, শাড়ীসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রীর বিজ্ঞাপন দেয়। কোন ব্যক্তি বিজ্ঞাপন দেখে অর্ডার করলে, অর্ডার নিশ্চিত হওয়ার পর গ্রেফতারকৃতরা নকল, ভাঙ্গাচুরা, নষ্ট ও অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের সামগ্রী প্যাকেটিং করে এস এ পরিবহন এন্ড কুরিয়ার সার্ভিসে বুকিং দেয়।
তিনি আরো বলেন, প্রতারক চক্রের প্রথম গ্রুপ রকি বিশ্বাস ও হেকমত আলী ১৬টি অনলাইন শপিং পেজের মাধ্যমে অনলাইনে দামি মোবাইলের ছবি দেখিয়ে অর্ডার কনর্ফাম করে এবং বুকিং মানি নেয়। প্রতারক চক্রের দ্বিতীয় গ্রুপ কচিবুর রহমান ৫টি অনলাইন শপিং পেজের মাধ্যমে অনলাইনে দামি ব্র্যান্ডের জুতা দেখিয়ে অর্ডার কনফার্ম করে এবং বুকিং নেয়। এরপর উভয় চক্র মোঃ আনিছুর রহমান শেখ ও মোঃ মাজহারুল ইসলাম কনফার্মকৃত অর্ডারের বিপরীতে নষ্ট ও ব্যবহারের অযোগ্য পণ্য প্যাকেজিং করে কুরিয়ারের মাধ্যমে ডেলিভারী করে। প্রতারক চক্রের তৃতীয় গ্রুপ শিমুল মন্ডল ও তার ভাই পলাতক অভিযুক্ত আশিকুর রহমান ওরফে সুজন ৩টি অনলাইন শপিং পেজের মাধ্যমে দামি ব্র্যান্ডের জামা-কাপড়ের বিজ্ঞাপন দেয়। সুজন নড়াইলে বসে অর্ডার কনফার্ম হলে ফোনে তার ভাই শিমুল মন্ডলকে অবহিত করে। সে নিজেও অর্ডার পেলে তখন গাউছিয়া ও নিউমার্কেটর সামনে ফুটপাত হতে অর্ডার অনুযায়ী অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের জামা-কাপড় ক্রয় করে এস এ পরিবহন এন্ড কুরিয়ার সার্ভিসে বুকিং দিয়ে অভিনব পদ্ধতিতে প্রতারণা করে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।