ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ (বিএ) ও আয়ারল্যান্ডের রায়ানএয়ারের মতো উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো তাদের ফ্লাইট সংখ্যা কমিয়ে আনছে। গতকাল তারা জানায়, নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ইতালিতে তারা ফ্লাইট কমাচ্ছে। এছাড়া জার্মানির বৃহত্তম উড়োজাহাজ সংস্থা লুফথানসাও তাদের ফ্লাইট উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সংকোচন করছে। খবর: এএফপি।
ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস গ্রুপের (আইএজি) মালিকানাধীন কোম্পানি বিএ বলছে, কভিড-১৯ রোগ ছড়িয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে চাহিদা হ্রাসে বিভিন্ন দেশে ২১৬টির মতো ফ্লাইট বাতিল করছে তারা। আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান পরিবহন সংস্থা (আইসিএও) বলছে, করোনাভাইরাসে ইতালি ইউরোপে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় নাম উঠানোয় বিশ্বব্যাপী উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর আয় ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি ডলার কমবে।
এক বিবৃতিতে বিএ বলছে, অব্যাহত করোনাভাইরাস সংকটের জেরে চাহিদা হ্রাসের সঙ্গে সংগতি রেখে ১৬-২৮ মার্চের মধ্যে বিভিন্ন ফ্লাইট একীভূত করছি। বাতিল হওয়া ফ্লাইটগুলোর গ্রাহকদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগের মধ্যে রয়েছি এবং তাদের জন্য সম্ভাব্য বিকল্প নিয়ে আলোচনা করছি।
বাতিল ফ্লাইটগুলোর মধ্যে রয়েছে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে নিউইয়র্কের জেএফকে এয়ারপোর্টে ১২টি ফ্লাইট এবং আলবেনিয়া, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি ও সুইজারল্যান্ডে ২০৪টি স্বল্প দূরত্বের ফ্লাইট।
বিএর প্যারেন্ট গ্রুপ আইএজির নিয়ন্ত্রণাধীন অন্যান্য এয়ারলাইনস যেমন স্পেনের আইবেরিয়া ও আয়ারল্যান্ডের এয়ার লিঙ্গাসের কতগুলো ফ্লাইট বন্ধ হবে, তা জানা যায়নি।
এদিকে সাও পাওলো থেকে মিলানে ২ মার্চ থেকে ১৬ এপ্রিল সব ফ্লাইট প্রত্যাহার করেছে ব্রাজিলের উড়োজাহাজ সংস্থা ল্যাটাম। পৃথকভাবে আইরিশ এয়ারলাইন রায়ানএয়ার বলছে, তারা স্বল্প দূরত্বের এক-চতুর্থাংশ ফ্লাইট বাতিল করছে, যেগুলোর বেশির ভাগই ছিল মূলত ইতালিতে।
এক বিবৃতিতে রায়ানএয়ার জানায়, যাত্রীদের অবহিত করা যাচ্ছে যে ১৭ মার্চ থেকে পরবর্তী তিন সপ্তাহের মধ্যে ২৫ শতাংশ স্বল্প দূরত্বের ফ্লাইট স্থগিত করা হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে দেখা গেছে, কভিড-১৯ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে মার্চের শেষ এবং এপ্রিলের প্রথম দিকে ফ্লাইট বুকিং লক্ষণীয় পরিমাণে কমেছে।
রায়ানএয়ার গতকাল এক পূর্বাভাসে জানায়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে আরো ইউরোপিয়ান এয়ারলাইন ধসে পড়বে। তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্যে থাকা খাতটি কয়েক বছর ধরেই বেশ চাপে রয়েছে।
করোনাভাইরাসে ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ইতালি। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় ১১টি শহরকে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হয়েছে।
সোমবার নাগাদ করোনাভাইরাসের কারণে নিহতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়েছে। এছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৯০ হাজারে। আক্রান্তের বড় অংশ চীনের নাগরিক হলেও গত কয়েক সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি ও ইরানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে।