চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধ থামিয়ে যখন বিশ্বজুড়ে আর্থিক বৃদ্ধির ইঙ্গিত মিলছিল ঠিক তখনই আবার করোনা ভাইরাস চীনে সংক্রমিত হওয়ায় সেই আশায় যেন জল ঢেলে দিল৷ ইতিমধ্যেই চীন থেকে ১৯টি দেশে এই করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে বলে খবর৷ তাছাড়া অন্যত্র এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশংকা দানা বেধেছে৷ পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তা লক্ষ্য করে বিশ্বজুড়ে লগ্নিকারীরা শেয়ার বেচে তুলনায় নিরাপদ কোন ক্ষেত্রে সেই অর্থ সরিয়ে নিতে চাইছেন৷ যেহেতু তারা আশংকা করছেন এই করোনা ভাইরাসের জেরে দুনিয়া জুড়ে মন্দা নেমে আসতে পারে৷
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুসারে, দেশের ৩১টি প্রদেশে আজ (বুধবার) পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৯৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে, যা সার্স ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যার চেয়েও বেশি। আর চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে আরও ১৯ জায়গায় অন্তত ৭০ জনের দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৬৫ জনে। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ ঠেকাতে এরইমধ্যে উহান ও আশপাশের ১৬টি শহরে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে চীনের কর্তৃপক্ষ।
অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, এশিয়া প্যাসেফিক অঞ্চলের অর্থনীতি রীতিমতো ঝুঁকির মুখে পড়বে যদি আগামী কয়েক সপ্তাহে করোনা ভাইরাস আরও ছড়িয়ে পড়ে৷ এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে কতটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সেটা নির্ভর করছে চীনের উহান শহরে এই মহামারী কত তাড়াতাড়ি তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তার উপর৷
এমএসসিআই ওয়াল্ড ইন্ডেক্স যা ২৩টি বাজারকে সূচিত করে এবং তা গত দশ দিনে ১.৩ শতাংশ কমেছে ৷ এই সময়ে ভারতের সেনসেক্সকেও প্রায় ২ শতাংশ নামতে দেখা গিয়েছে ৷ মঙ্গলবার সেনসেক্স .৪৬ শতাংশ নিচে নামে ৷ তবে বুধবার ভারতে শেয়ার বাজারের অবস্থা কিছুটা ভাল ৷ তবে এদিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ সেনসেক্সের অবস্থা বরং ভাল ছিল ৷ ওই সময় গত দিনের তুলনায় ২৫০ পয়েন্ট উপরে ছিল৷
ইতিমধ্যেই চীনের রাষ্ট্র্পতি সি জিংপিং আশ্বাস দিয়েছেন করোনা ভাইরাস মোকাবিলা করার মতো আত্মবিশ্বাসী৷ তবে আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় সতর্কের ঘন্টা বেজে গিয়েছে৷ ভারত সহ বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের সেখান থেকে নিয়ে আসার উদ্যোগ নিয়েছে৷
বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে হোন্ডা মোটর কোম্পানি, নিশান মোটর কোম্পানি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা থেকে শ্রমিকদের সরানো ব্যবস্থা করছে ৷ তাছাড়া থিম পার্ক, সিনেমা থিয়েটার হল, রেস্তেরাঁ ইত্যাদি আপাতত বন্ধ রেখেছে৷