কলেরার প্রাদুর্ভাবে অনেক মানুষ মারা যাওয়ার পর ইয়েমেনের রাজধানী সানায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
হুতি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত সানার হাসপাতালগুলো কলেরা রোগীতে উপচে উঠেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
রেডক্রস জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে দেশটিতে কলেরা রোগীর সংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়ে আট হাজার ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে।
গৃহযুদ্ধে জর্জরিত ইয়েমেনে তীব্র খাদ্যাভাব বা প্রায় দুর্ভিক্ষ চলছে, এতে ক্ষুধার্ত মানুষের মধ্যে কলেরা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, দেশটির দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ নিরাপদ খাবার পানি পাচ্ছে না।
রোববার সানায় এক সংবাদ সম্মেলনে রেডক্রসের কার্যক্রম পরিচালনা বিভাগের প্রধান ডমিনিক স্টিলহার্ট জানান, ২৭ এপ্রিল থেকে ১৩ মে-র মধ্যে কলেরায় দেশটিতে ১১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
“এখন গুরুতর প্রাদুর্ভাবের মোকাবিলা করছি আমরা,” বলেন তিনি।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, সানাতেই কলেরার প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি, এর পরে আছে রাজধানীর চারপাশে ঘিরে থাকা আমানত আল সামাহ প্রদেশ।
কলেরা একটি পানিবাহিত রোগ। প্রধানত দুষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। প্রবল ডায়রিয়া ও বমি রোগটির প্রধান লক্ষণ। কলেরা আক্রান্ত রোগী দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ে, আর সময়মতো চিকিৎসা না করালে কয়েক ঘন্টার মধ্যে মারা যেতে পারে।
ইয়েমেনে পুরোপুরি চালু থাকা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সংখ্যা ৪৫ শতাংশেরও কম বলে গত সপ্তাহে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। গৃহযুদ্ধে ৩০০টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক পুরোপুরি ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব সংস্থাটি।
হুতি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা দখল করে প্রেসিডেন্ট আব্দরাব্বু মনসুর হাদিকে ক্ষমতাচ্যুত করে। সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন আরব দেশগুলোর জোট সুন্নি হাদির পক্ষ নিয়ে শিয়া হুতিদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ইরান হুতিদের সমর্থন দিচ্ছে।
২০১৫ সালের মার্চে শুরু হওয়া এ লড়াইয়ে এ পর্যন্ত আট হাজার ১০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং ৪৪ হাজার ৫০০ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। হতাহতদের অধিকাংশই বেসামরিক।