ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেয়া ২১৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে জো রুটের সেঞ্চুরিতে সহজেই জয় পেল ইংল্যান্ড। সাউথ্যাম্পটনের রোজ বৌলে একপেশে ম্যাচে ৮ উইকেটে জিতেছে ইংল্যান্ড।
বড় ইনিংস খেলতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেউ। সবার ছোট ছোট অবদানে লড়াই করার মতো সংগ্রহ গড়ার পথে ছিল তারা। ২৪ রানের মধ্যে শেষ ৫ উইকেট তুলে নিয়ে তাদের ২১২ রানে থামিয়ে দেন মার্ক উড ও জফরা আর্চার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসের অষ্টম ওভারে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ওপেনার জেসন রয়। ৪০তম ওভারে চোটের জন্য মাঠ ছাড়েন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান মর্গ্যান। তাতে ব্যাটিং অর্ডার নতুন করে সাজাতে হয় ইংল্যান্ডের। অলরাউন্ডারসহ ছয় পেসার নিয়ে খেলা ক্যারিবিয়ানরা সেই সুবিধা নিতে পারেনি। অপরাজিত ১০০ রানের ইনিংসে দলকে দাপুটে জয় এনে দেন ষোড়শ সেঞ্চুরি পাওয়া রুট।
ব্যাটিংয়ে শুরুটা ভালো হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। একাদশে ফেরা এভিন লুইস আবারও ব্যর্থ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেছিলেন ১, ক্রিস ওকসের ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে এবার বিদায় নিলেন ২ রান করে। ১৫ রানে জীবন পাওয়া ক্রিস গেইল শট খেলতে শুরু করেছিলেন। দারুণ এক বাউন্সারে তাকে ফেরান লিয়াম প্লানকেট। নড়বড়ে শেই হোপকে এলবিডব্লিউর সফল রিভিউয়ে ফেরায় ইংল্যান্ড।
৫৫ রানে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে চাপে পড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রতিরোধ গড়ে শিমরন হেটমায়ার ও নিকোলাস পুরানের ব্যাটে। দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের জুটি ভাঙতে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো রুটকে বোলিংয়ে আনেন অধিনায়ক মর্গ্যান।
চারটি চারে ৩৯ রান করা হেটমায়ারকে ফিরিয়ে ৮৯ রানের জুটি ভাঙেন রুট। অনিয়মিত এই অফ স্পিনার পরে ফেরান অধিনায়ক হোল্ডারকে। ব্যাক্তিগত ৩ রানে জীবন পাওয়া আন্দ্রে রাসেল কাজে লাগাতে পারেননি সুযোগ। বোলিংয়ে ফিরে বিস্ফোরক অলরাউন্ডারকে বিদায় করেন উড। তার সঙ্গে আরেক গতিময় পেসার আর্চারের ছোবলে মাত্র ২৪ রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
তিন চার ও এক ছক্কায় ৬৩ রান করা পুরানকে কট বিহাইন্ড করে শিকার ধরেন নিজের জন্মভূমির বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলা আর্চার। পরে কার্লোস ব্র্যাথওয়েট ও শেলডন কটরেলকে বিদায় করেন তিনি।
শ্যানন গ্যাব্রিয়েলকে বোল্ড করে ৩২ বল বাকি থাকতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে থামিয়ে দেন উড। চোট শঙ্কাকে পেছনে ফেলে খেলা এই পেসার ১৮ রানে নেন ৩ উইকেট। আর্চার ৩ উইকেট নেন ৩০ রানে।
রয়ের অনুপস্থিতিতে প্রথমবারের মতো ওপেন করতে নেমে দলকে পথ দেখান রুট। তিন নম্বরে ব্যাটিং করায় অবশ্য নতুন বল সামলাতে তিনি অভ্যস্ত। তবে নিয়মিত ওপেনার জনি বেয়ারস্টোর চেয়েও সাবলীল ছিলেন তিনি।
পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শর্ট বলে সাফল্য পেয়েছিল ক্যারিবিয়ান পেসাররা। ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে এই কৌশল খুব একটা কাজেই আসেনি। রুট ও বেয়ারস্টো তো বটেই প্রমোশন পেয়ে তিনে নামা অলরাউন্ডার ওকসও সাবলীল ছিলেন শর্ট বলের বিপক্ষে।
এবারের আসরে প্রথমবারের মতো খেলা গতিময় পেসার গ্যাব্রিয়েল ভাঙেন ৯৫ রানের উদ্বোধনী জুটি। ছক্কার চেষ্টায় সীমানায় ক্যাচ দিয়ে ফিরেন বেয়ারস্টো। ৭ চারে তিনি করেন ৪৫ রান।
ওকসের সঙ্গে ১০৪ রানের জুটিতে দলকে জয়ের দোরগোড়ায় নিয়ে যান রুট। চারটি চারে ৪০ রান করা ওকসকে ফিরিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিও ভাঙেন গ্যাব্রিয়েল। বেন স্টোকসকে নিয়ে বাকিটা সহজেই সারেন রুট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৪.৪ ওভারে ২১২ (গেইল ৩৬, লুইস ২, হোপ ১১, পুরান ৬৩, হেটমায়ার ৩৯, হোল্ডার ৯, রাসেল ২১, ব্র্যাথওয়েট ১৪, কটরেল ০, টমাস ০*, গ্যাব্রিয়েল ০; ওকস ৫-২-১৬-১, আর্চার ৯-১-৩০-৩, প্লানকেট ৫-০-৩০-১, উড ৬.৪-০-১৮-৩, স্টোকস ৪-০-২৫-০, রশিদ ১০-০-৬১-০, রুট ৫-০-২৭-২)
ইংল্যান্ড: ৩৩.১ ওভারে ২১৩/২ (বেয়ারস্টো ৪৫, রুট ১০০*, ওকস ৪০, স্টোকস ১০*; কটরেল ৩-০-১৭-০, টমাস ৬-০-৪৩-০, গ্যাব্রিয়েল ৭-০-৪৯-২, রাসেল ২-০-১৪-০, হোল্ডার ৫.১-০-৩১-০, ব্র্যাথওয়েট ৫-০-৩৫-০, গেইল ৫-০-২২-০)
ম্যান সেরার পুরস্কার পেয়েছেন জো রুট