খুলনার ফুলতলা উপজেলার বুড়িয়াডাঙ্গা গ্রামের মোবারক সরদার ভাগ্য বদলাতে জীবনের অর্ধেকেরও বেশি সময় বিদেশে কাটিয়েছেন। তবুও ভাগ্য বদলাতে পারেননি। অবশেষে নিজ জমিতেই মাছের খামার এবং আমবাগান করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। দুইবার সফল মৎস্য খামারির সাফল্যও অর্জন করেছেন।
মোবারক সরদারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভাগ্য বদলাতে ১৯৮৮ সালে তিনি আবুধাবি পাড়ি জমান। একপর্যায়ে পরিবারের প্রধানকর্তা তার মেজো ভাই মারা যান। এতেই চরম অন্ধকার নেমে আসে তার পরিবারে। বাধ্য হয়ে বাড়িতে ফিরতে হয় তাকে। জীবিকার টানে দিগিবিদিক ছুটে বেড়ান মোবারক। অবশেষে ২০০৭ সালে পরিবারের ছোট্ট মাছের খামারকেই নিজের আয়ের উৎস হিসেবে বেছে নেন। তার এ উদ্যোগে আত্মীয়স্বজন ও নিকটজন সহায়তা দেন।
বর্গা নেয়া চার বিঘা জমির সঙ্গে নিজের ও আত্মীয়স্বজনের মিলিয়ে ২৮ বিঘা জমিতে গড়ে তোলেন ‘ভাই ভাই মৎস্য খামার’। খামারের চারদিকে সীমানা প্রাচীর তৈরি করেন ৫৫০টি আম গাছের চারা দিয়ে। খামারে চিংড়ি, রুই, কাতলা, মিনার কাপ, তেলাপিয়া, কই, মাগুর ও শিং মাছের ৩ লাখ পোনা ছাড়েন। খামারটি নিজে এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা দেখভাল করেন। আর ৪ থেকে ৫ জন শ্রমিক নিয়মিত খামারের পরিচর্যা করেন।
এখন বছরে অন্তত ২ থেকে ৩ বার মাছ ধরেন। প্রতিবারেই ১৫ থেকে ২০ লক্ষাধিক টাকা আসে। এছাড়া খামারে আম গাছের চারা প্রাধান্য পেলেও লিচু ও নারিকেলসহ সবজিও আবাদ করেন। বছরে আমের উৎপাদন এনে দেয় লক্ষাধিক টাকা।
২০১৬ সালে উপজেলা পর্যায়ে সেরা মৎস্য খামারির সনদ পেয়েছেন। এর আগেও একবার সেরা মৎস্য খামারির পুরস্কার লাভ করেন। তার মতে, জীবনের সর্বস্ব বিনিয়োগ করে ঝুঁকি নিয়েছিলেন, তাই সফলতা মিলেছে।