পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে হার মানলেন পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিদগ্ধ দুইজন। আনোয়ার হোসেন ও সোহাগ নামের এই দুইজনের মৃত্যুতে ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা ৬৯ জনে দাঁড়াল।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি অগ্নিকাণ্ডের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে আরও সাতজনের সঙ্গে ভর্তি করা হয়েছিল তাদের।
বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন বলেন, সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টা ২০ মিনিটে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনোয়ারের মৃত্যু হয়। আর রাত দেড়টায় মারা যান সোহাগ। ৫৫ বছর বয়সী আনোয়ার আর ২৫ বছর বয়সী সোহাগ- দুজনেরই দেহের ৬০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
রিকশাচালক আনোয়ারের বাবার নাম আলী হোসেন। তার বাড়ি রাজবাড়ী জেলার রায়নগর গ্রামে। কামরাঙ্গীরচরের ছাতা মসজিদের পূর্বপাশে স্ত্রী হাজেরা বেগম এবং তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকতেন আনোয়ার।
আগুনের ক্ষত নিয়ে চিকিৎসাধীন বাকি সাতজনের খবর জানতে চাইলে ডা. সামন্ত লাল বলেন, একজনও আশঙ্কামুক্ত নন। “কেমিকেল বার্ন কোনো সময় সুপারফিশিয়াল বার্ন হয় না, ডিপ বার্ন হয়। এই রোগীদের সবারই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে।”
আগুনের ক্ষত নিয়ে বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন এখন সাতজন-
আইসিইউতে থাকা রোগীদের মধ্যে রেজাউলের (২১) শরীরের ৫১ শতাংশ, জাকিরের (৩৫) শরীরের ৩৫ শতাংশ, মোজাফফরের (৩২) শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়েছে।
ওয়ার্ডে থাকা হেলালের (১৮) শরীরের ১৬ শতাংশ, সেলিমের (৪৪) শরীরের ১৪ শতাংশ, মাহমুদুলের (৫২) শরীরের ১৩ শতাংশ এবং সালাহউদ্দিনের (৪৫) শরীরের ১০ শতাংশ পুড়েছে বলে চিকিৎসকরা জানান।
অগ্নিকাণ্ডের পর ফায়ার সার্ভিস ৬৭টি লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। তার মধ্যে ৪৮ জনের মরদেহ শনাক্ত করার পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ।
বাকিদের শনাক্ত করার জন্য তাদের সম্ভাব্য স্বজনদের ডিএনএ নমুনা নিয়েছে সিআইডি। লাশের ডিএনএ নমুনার সঙ্গে তা মিলিয়ে শনাক্ত হওয়ার পর হস্তান্তর করা হবে লাশগুলো।
অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে সোমবার বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হয়।