মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আবারও ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে চীন। ৫৩ দশমিক ৫০ টন ত্রাণ নিয়ে চীনের একটি কার্গো ফ্লাইট বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরীর হাতে এসব ত্রাণসামগ্রী হস্তান্তর করেন চীন দূতাবাসের ইকোনমিক অ্যান্ড কর্মাশিয়াল কাউন্সিলর লি গুয়ানজিয়ান।
এদিকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য প্রথম জাহাজে করে ত্রাণ পাঠিয়েছে ভারত। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে পাঁচটায় ‘আইএনএস ঘড়িয়াল’ জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের ১ নম্বর জেটিতে ভিড়ে। জাহাজটির লোকাল এজেন্ট এমএম ইস্পাহানি লিমিটেডের পিস এক্টিভিস্ট লোকপ্রিয় বড়ুয়া জানান, এ জাহাজে ৬২ হাজার প্যাকেজ ত্রাণ এসেছে। এর মধ্যে চাল, ডাল, ভোজ্য তেল ইত্যাদি রয়েছে। বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এসব ত্রাণসামগ্রী আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন। এ সময় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ সফলতার সঙ্গে বড় মানবিক সংকট মোকাবেলা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। ত্রাণ বুঝে নেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী। জাহাজটিতে ৬২ হাজার ফ্যামিলি প্যাক রয়েছে। চটের বস্তায় প্রতিটি প্যাকে চাল, মশুর ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, গুঁড়োদুধ, লবণ, চা, মশারি, সাবান রয়েছে।
ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বিতাড়িত মানুষের ঢলে বাংলাদেশে যে মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছিল তাতে সাড়া দিয়ে ভারত সরকার ‘অপারেশন ইনসানিয়াৎ’ চালু করেছিল। ত্রাণসামগ্রীর দ্বিতীয় চালান চট্টগ্রাম বন্দরে এ জাহাজে করে পৌঁছেছে। আমরা খুবই খুশি। বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণসামগ্রী দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে। এর আগে দুই দফা কার্গো বিমানে করে রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ পাঠিয়েছিল ভারত।
এদিকে চীনের পাঠানো ত্রাণ সামগ্রীর বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. হাবিবুর রহমান জানান, দ্বিতীয় দফায় চীনের পাঠানো ৫৩ দশমিক ৫০ টন ত্রাণসামগ্রী এসেছে। দুই দফায় ১১০ টন ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে চীন। ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে ২ হাজার পিস তাঁবু ও ৩ হাজার পিস কম্বল রয়েছে। এসব ত্রাণসামগ্রী কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে। এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ৫৭ টন ত্রাণসামগ্রী পাঠায় চীন।