বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা। আগুন ছড়িয়ে পড়ল জাপানের প্রখ্যাত কিয়োটো অ্যানিমেশন সংস্থার স্টুডিওতে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩৩ জন মারা গিয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জখম কমপক্ষে ৩৫ জন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির কাছে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ৪১ বছর বয়সি একটি লোক সকলের নজর এড়িয়ে স্টুডিয়োর ভিতরে ঢুকে পড়ে। তার পরে পেট্রোল ছড়িয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। লোকটিকে আটক করেছে পুলিশ। তবে তার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। লোকটি ওই সংস্থার কর্মী ছিল না। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীরা তাকে বলতে শুনেছে, তার কোনও কিছু ‘চুরি’ করেছে ওই সংস্থা। আগুন লাগানোর সময়েও তাকে চিৎকার করে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘তোমরা মরো।’’ কিন্তু এ বাদ দিয়ে লোকটি কেন এ কাজ করল, তা স্পষ্ট করে জানায়নি প্রশাসন। নিজের হাত, পা-ও পুড়িয়ে ফেলেছে লোকটি। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তারও।
কিয়োটো স্টেশনের বেশ কয়েক কিলোমিটার দক্ষিণে অ্যানিমেশন স্টুডিয়োটি তৈরি হয়েছিল ১৯৮১ সালে। ‘কিয়োঅ্যানি’ নামেই বেশি পরিচিত। এটি জাপানের নামজাদা স্টুডিয়োগুলোর মধ্যে একটি। ‘ফ্রি’, ‘কে-অন’, ‘হারুহি সুজ়ুমিয়া’, ‘ভায়োলেট এভারগ্রিন’-এর মতো অ্যানিমেশনের কাজ হয়েছে এখানে। স্টুডিয়োর চারপাশে বসতি এলাকা। বাসিন্দাদেরই প্রথম চোখে পড়ে আগুন। নিমেষে তা ছড়িয়ে পড়ে চারতলা বাড়িটিতে।
দমকলের তরফে জানানো হয়েছে, সকাল ১০টা ৩৫ থেকে ফোন আসতে শুরু করে। অনেকেই বলেছিলেন, বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনেছেন। দমকলের এক কর্তা জানান, আগুন লাগার সময়ে বাড়িটিতে অন্তত ৭০ জন কর্মী ছিলেন। এ পর্যন্ত ৩৩ জনের মৃত্যুর খবর মিললেও, সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে। স্টুডিয়োর ভিতরে যত খোঁজা হয়েছে, ততই নিথর দেহ মিলেছে। বেশির ভাগেরই ধোঁয়ায় শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। জখম ৩৫ জনের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কিয়োটো অ্যানিমেশনের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
জাপানে অপরাধের হার খুবই কম। এর জন্যেই দেশটা সুখ্যাত। সে দেশে ইচ্ছাকৃত ভাবে আগুন লাগিয়ে ৩৩ জনকে হত্যার মতো অপরাধ প্রমাণ হলে ধৃতের মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। ২০০৮ সালে ওসাকায় একই ভাবে আগুন লাগিয়ে ১৬ জনকে হত্যা করেছিল এক ব্যক্তি। মৃত্যুদণ্ড হয়েছে তার।