কেস-ফলোআপঃ ৪
ঘটনার তারিখ ও সময়ঃ ৩১/১২/২০১৬ তারিখ রাত অনুমান-১০.০০ টা হতে ০১/০১/২০১৭ তারিখ সকাল অনুমান ০৬.৪৫ টার মধ্যে যেকোন সময়।
ঘটনাস্থলঃ তুরাগ থানার ভাটুলিয়া তালতলা খেয়াঘাট এর দক্ষিণ পাশে মেসার্স মেটকো এন্টারপাইজ এর ক্রয়কৃত জমিতে একটি টিনের দোচালা ঘরের ভিতর।
বাদীঃ ভিকটিমের স্ত্রী মোসাঃ কিবরিয়া বেগম।
মামলা নং ও তারিখঃ তুরাগ থানার মামলা নং ০১, তারিখ: ০১/০১/২০১৭ ইং।
ধারাঃ ৩০২ পেনাল কোড।
তদন্তকারী সংস্থাঃ তুরাগ থানা, ডিএমপি, ঢাকা।
মোট অভিযুক্তঃ ১ জন।
মোট সাক্ষীঃ ১২ জন।
মোট নিহতঃ ১ জন (ভিকটিম শাহাবুদ্দিন)।
উদ্ধারঃ একটি দেশীয় লোহার তৈরি ধারালো রক্ত মাখা হাসুয়া, যা কাঠের বাটসহ লম্বা অনুমান ২৪ ইঞ্চি।
মোট আলামতঃ
১। একটি চায়না তালা, যার সাথে লোহার কড়া লাগানো।
২। একটি ঘিয়ে রংয়ের নেটের মশারী, যাতে রক্ত মাখা ও কাটা চিহ্ন আছে।
৩। একটি কালো রংয়ের রক্ত মাখা জ্যাকেটের অংশ বিশেষ।
৪। একটি সাদার মধ্যে আকাশী রংয়ের রক্ত মাখা শার্টের হাতার কাটা অংশ বিশেষ।
৫। একটি সাদা রক্ত মাখা সেন্ডো গেঞ্জির কাটা অংশ বিশেষ।
৬। একটি রক্ত মাখা সাদা ছোট চেক লুঙ্গির কাটা অংশ বিশেষ।
৭। একটি দেশীয় লোহার তৈরি ধারালো রক্ত মাখা হাসুয়া, যা কাঠের বাটসহ লম্বা অনুমান ২৪ ইঞ্চি।
কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীঃ ১ জন।
এজাহারের সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ
বাদী ভিকটিমের স্ত্রী মোসাঃ কিবরিয়া বেগম তার সংঙ্গীয় মোঃ শাহ আলম শেখ এবং মোঃ সেলিম শিকদারসহ থানায় হাজির হয়ে এজাহার দায়ের করেন যে, তিনি তার স্বামী মোঃ শাহাবুদ্দিন মোল্লা(৩৫), পিতা-মোঃ ধানু মোল্লা, সাং- বালাকান্দি, থানা- সখিপুর, জেলা- টাঙ্গাইলসহ দুই ছেলে, এক মেয়েকে নিয়ে তার বর্তমান বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে আসছেন। বাদীর স্বামী মোঃ শাহাবুদ্দিন মোল্লা তুরাগ থানার ভাটুলিয়া তালতলা খেয়াঘাট এর দক্ষিণ পাশ্বে একটি চায়ের দোকান পরিচালনাসহ মেসার্স মেটকো এন্টারপাইজ এর ক্রয়কৃত জমিতে একটি টিনের দোচালা ঘরে কোম্পানির মালামাল দেখাশুনার জন্য সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে চাকুরী করত এবং উক্ত টিনশেড ঘরে রাত্রীতে থাকত। বাদীর স্বামী প্রতিদিনের ন্যায় ৩১/১২/১৬ইং তারিখ রাত অনুমান ১০.০০ টায় বাদীর বাসায় খাওয়া-দাওয়া শেষ করে তার কর্তব্য কর্মের উদ্দেশ্যে বাসা হতে বের হয়ে যায়। ইং ০১/০১/১৭ তারিখ সকাল অনুমান ০৬.৪৫ টায় পার্শ্ববতী দোকানদার মোঃ ফজলুল হক তার দোকানের মালামাল আনার জন্য বাদীর স্বামীর রাত্রীকালীন থাকা টিনশেড ঘরের সামনে গিয়ে দেখে, ঘরের দরজায় তালা লাগানো। তখন উক্ত ফজলুল হক বাদীর স্বামীকে ডাকাডাকি করে কোন সাড়া-শব্দ না পেয়ে টিনের দরজার ফাঁক দিয়ে দেখে যে, বাদীর স্বামী মোঃ শাহাবুদ্দিন মোল্লা গলাকাটা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তখন ফজলুল হক তাৎক্ষনিক উক্ত কোম্পানীর অপর নাইট গার্ড সেলিম শিকদার এর বর্তমান বাসায় গিয়ে ঘটনার বিষয়টি জানালে ফজলুল হক ও সেলিম শিকদারদ্বয় দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে ঘরের দরজার তালা লোহাররড দিয়ে খুলে ভিতরে প্রবেশ করে এবং দেখে যে, বাদীর স্বামী গলাকাটা ও রক্তাক্ত জখম এবং মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। বাদী ০১/০১/১৭ইং তারিখ সকাল অনুমান-০৭.২০ টার সময় উক্ত ঘটনার সংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে এসে দেখেন যে, তার স্বামীর জবাই করা (গলাকাটা), মাথার বাম পাশে কানের সামান্য উপরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ৩/৪ টি রক্তাক্ত গুরুতর জখম। বাম হাতের তালুর উল্টা পাশে দুইটি কাটা জখম এবং পুরুষ লিঙ্গ ধারালো অস্ত্র ধারা কাঁটা ও শরীর থেকে বিছিন্ন করা মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। গত ৩১/১২/১৬ তারিখ রাত অনুমান ১০.০০ টা হতে ০১/০১/১৭ তারিখ সকাল ০৬:৪৫ টার মধ্যে যেকোন সময় অজ্ঞাত নামা দুস্কৃতিকারীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজসে বাদীর স্বামীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর জখম ও লিঙ্গ বিছিন্নকরনসহ গলাকেটে জবাই করে হত্যা করে ।
তদন্তঃ
অত্র মামলার ভিকটিম মৃত শাহাবুদ্দিন মোল্লা ভাটুলিয়া তালতলা খেয়া ঘাটের দক্ষিন পার্শ্বে মেসার্স মেটকো এন্টারপ্রাইজ কোম্পানীতে সিকিউরিটি গার্ড হিসাবে চাকুরী করত পাশাপাশি একটি চায়ের দোকান চালাত। ভিকটিম শাহাবুদ্দিন মোল্লা উক্ত কোম্পানীর মালামাল দেখাশোনা করার জন্য মেসার্স মেটকো এন্টারপ্রাইজ কোম্পানীর ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে তৈরি করা টিনের দোচালা ঘরে রাতে ঘুমাইত। ভিকটিম শাহাবুদ্দিন মোল্লা গত ৩১/১২/১৬ইং তারিখ রাত অনুমান ১০.০০ টায় প্রতিদিনের ন্যায় তার বাসা হতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে মেসার্স মেটকো এন্টারপ্রাইজ কোম্পানীর ক্রয় করা সম্পত্তিতে তৈরি করা টিনের দোচালা ঘরে ঘুমায়। ভিকটিম শাহাবুদ্দিন মোল্লার সাথে আল আমিনের পূর্ব হতে মনোমালিন্য চলছিল । উক্ত মনোমালিন্যের কারণে আল আমিন গত ০১/০১/১৭ইং তারিখ রাত অনুমান ০৩.৩০ টায় মামলার ঘটনাস্থলে অর্থাৎ ভিকটিম শাহাবুদ্দিন মোল্লার শয়ন কক্ষে প্রবেশ করে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ধারালো হাসুয়া (দা) দিয়ে শাহাবুদ্দিন মোল্লাকে কুপিয়ে এবং পুরুষাঙ্গ কেটে হত্যা করে। তূরাগ থানা পুলিশ ক্লুলেস এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করে। এ ঘটনার সাথে জড়িত মোঃ আল আমিনকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত ১ জন হলোঃ
মোঃ আল আমিন (২৮), পিতা- মোঃ মাতু মিয়া , স্থায়ী : গ্রাম- বেড়ানগর, উপজেলা/থানা- বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
মামলার বর্তমান অবস্থাঃ
এ সংক্রান্তে ডিএমপি’র তুরাগ থানা ২০১৭ সালের ১০ জুন গ্রেফতারকৃত আল আমিনের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৩০২ ধারায় অভিযোগ পত্র প্রদান করে। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন।