কেস ফলোআপঃ ০৩
ঘটনার তারিখ ও সময়ঃ ২১ জানুয়ারি, ২০১৭ইং ও সকাল ৮টা হতে ২২ জানুয়ারি, ২০১৭ইং দুপুর ১২.১০ টার মধ্যে যে কোন সময়।
ঘটনাস্থলঃ তুরাগ থানাধীন পাকুরিয়া গ্রামের ১৫নং সেক্টরের এ/১ ব্লকের দক্ষিণ পার্শ্বে সামসুল হকের মৎস খামারের পশ্চিম পাশে রাজউকের পানি বের হওয়ার ড্রেনের নিচে।
বাদীঃ মোহাম্মদ আলী (ভিকটিমের পিতা)।
মামলা নং ও তারিখঃ তুরাগ থানার মামলা নং ১২ তারিখ: ২২/০১/২০১৭ ইং।
ধারাঃ পেনাল কোড ৩০২/২০১/৩৪ ধারা।
তদন্তকারী ইউনিটঃ তুরাগ থানা, ডিএমপি, ঢাকা।
অভিযোগ পত্রঃ তুরাগ থানার অভিযোগ পত্র নং-২১৪ তারিখঃ ৩১/১০/২০১৭ ইং।
ধারাঃ ৩০২/৩৭৯/৪১১/২০১/৩৪ পেনাল কোড।
মোট অভিযুক্তঃ ০৩ জন ।
মোট সাক্ষীঃ ১৭ জন।
মোট নিহতঃ ০১ জন (ভিকটিম)।
উদ্ধারঃ ভিকটিমের ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন।
মোট আলামতঃ ০৩ টি।
১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদানঃ ০২ জন
এজাহারের সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ অত্র মামলার বাদী মোহাম্মদ আলী (৬৮), পিতা-মৃত আঃ রহমান, সাং-উত্তর পাড়া উলুদাহা, থানা-তুরাগ, ঢাকা। অভিযোগ করেন যে, তার ছেলে মোঃ আকবর হোসেন (২৮) বাক প্রতিবন্ধী। তবে অস্পষ্ট বা মা বলতে পারত। সে অত্র এলাকায় ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করত। বিশ্ব ইজতেমা/১৭ উপলক্ষে গত ২১/০১/১৭ তারিখ সকাল অনুমান ০৮.৩০ টার সময় নিজ বসত বাড়ি হতে বিশ্ব ইজতেমায় ভিক্ষা করার জন্য বের হয়ে যায়। সে আর বাসায় ফেরত আসেনি। গত ২২/০১/১৭ তারিখ বেলা অনুমান ১২.১০ টায় বিশ্ব ইজতেমার আখেরী মোনাজাত শেষে মুসল্লিগন ঘটনাস্থল তুরাগ থানাধীন পাকুরিয়া গ্রামের ১৫নং সেক্টরস্থ এ/১ ব্লকের দক্ষিণ পার্শ্বে বালুর মাঠের পূর্ব পার্শ্বে জনৈক সামসুল হক এর মৎস্য খামারেরর পশ্চিম পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় রাজউকের পানি বের হওয়ার ড্রেন (চুঙ্গীর) সামান্য ভিতরে বালুর বস্তা দিয়ে ঢাকানো অবস্থায় বাদীর ছেলের (বাম হাতের কনুই পর্যন্ত এবং ডান পায়ের সামান্য অংশ দেখা যায়) লাশ পথচারী ইজতেমার লোকজন দেখতে পেয়ে লাশ লাশ বলে আলোচনা করে। বাদী লোক মুখে শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলের হাত, পা ও পরনে থাকা সুয়েটার দেখে বালুর বস্তা সরিয়ে ছেলে আকবরের লাশ সনাক্ত করেন। উপস্থিত সাক্ষীদের এবং পুলিশের সহায়তায় লাশ বের করে রাস্তায় নিয়ে আসেন। তার ছেলের গলার দুই পাশে ছোলা জখম এবং ঘাড় মটকানো ছিল।
তদন্তঃ সম্পূর্ণ ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর মামলাটি তদন্ত করে তুরাগ থানা পুলিশ। তদন্তকালে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে প্রাপ্ত তথ্যের মাধ্যমে আসামী ১। মোঃ বিল্লাল হোসেন (২১), ২।হাসু ওরফে হাসমত (৪৫) ও ৩। সুজন (২৬) দের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ১ ও ২ নং আসামী আদালতে ১৬৪ কাঃ বিঃ অনুযায়ী স্বীকারোক্তি প্রদান করে। সার্বিক তদন্ত ও সাক্ষ্য প্রমাণে জানা যায়, বাদীর ছেলে মোঃ আকবর ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করলেও তার একটি পুরাতন G-Mobile মডেল G-206 মোবাইল ছিল। সে সিম কার্ড ছাড়া এটাতে মেমোরি কার্ড ব্যবহার করে শুধু গান শুনত। বিশ্ব ইজতেমা/১৭ উপলক্ষে গত ২১/০১/১৭ তারিখ বিশ্ব ইজতেমায় ভিক্ষা করার জন্য যায়। ভিক্ষা শেষে বাদীর ছেলে বাসায় ফেরার পথে ২১/০১/১৭ তারিখ রাত অনুমান ১১.৩০ টায় উল্লেখিত ঘটনাস্থলে পৌঁছলে আসামী মোঃ বিল্লাল হোসেন, হাসু ওরফে হাসমত ও সুজন বাদীর ছেলে আকবর এর নিকটে থাকা মোবাইল ফোনটি নেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করে। আকবরের কাছ থেকে মোবাইল ফোনটি সুজন জোর করে নিয়ে নেয়। আকবর বাধা দেওয়ায় তারা গলা টিপে তাকে হত্যা করে। হত্যার পর তার লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থলে ড্রেনের সাইডে ফেলে বালুর বস্তা দিয়ে লাশ ঢেকে রাখে।
গ্রেফতারকৃত ৩ জন হলোঃ
১। মোঃ বিল্লাল হোসেন (২১), পিতা-মোঃ ডালিম মিয়া।
২। হাসু ওরফে হাসমত (৪৫), পিতা- আঃ আজিজ
৩। সুজন (২৬), পিতা-বাচ্চু চৌকিদার।
তাদের প্রত্যেকের বাড়ি তুরাগ থানার পাকুরিয়া গ্রামে।
মামলার বর্তমান অবস্থাঃ মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।