এবারের ঈদে বাংলা সিনেমার দর্শকদের জন্য বড় পর্দায় তিনটি ছবি মুক্তি পেয়েছে। যার মধ্যে কেবল একটি ছবিই (রাজনীতি) দেশীয় প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছে। ফলে যৌথ প্রযোজনার ছবি দুটির সামনে দেশীয় ছবিটি মুখ থুবড়ে পড়বে বলে মত দিয়েছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের বাজার বিশ্লেষকরা। তবে ঘটনা ঘটেছে এর উল্টো। বড় বাজেটের সিনেমা ‘নবাব’ ও ‘বস-২’ এর সঙ্গে বরং পাল্লা দিয়ে ব্যবসা করছে দেশীয় ছবি ‘রাজনীতি’।
এনএস বুলবুল বিশ্বাসের পরিচালনায় নির্মিত ‘রাজনীতি’ ছবিটি ঈদুল ফিতরে ঢাকার একটি হলসহ সারাদেশের মোট ৪০টি সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে। শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস অভিনীত এই ছবিটি আদৌ ব্যবসা করতে পারবে কিনা তা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন পরিচালক নিজেও। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দর্শকদের আগ্রহ বাড়ছে ‘রাজনীতি’তে, সেই সঙ্গে মুভিটির পরিচালক-প্রযোজকের মুখেও ফুটছে হাসি।
যে হলগুলোতেও ‘রাজনীতি’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে, মুক্তির প্রথম দিন থেকে প্রায় সবগুলো হলই হাউসফুল যাচ্ছে। কাকরাইল কেন্দ্রিক বাংলা সিনেমার বাজার বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে রাজনীতির হল সংখ্যা বেড়ে যাবে। এদিকে ঢাকার যমুনা ব্লকবাস্টার থিয়েটারে দর্শক আগ্রহের কারণে ছবিটির শো বাড়াতে হয়েছে। হলটির কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে গতকাল শুক্রবার থেকে যমুনার দুই থিয়েটারে ছবিটির ৪টি করে প্রদর্শনী চলছে।
শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস ছাড়াও ‘রাজনীতি’ ছবিতে আরো অভিনয় করেছেন আনিসুর রহমান মিলন, আলীরাজ, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়শ্রী কর জয়া প্রমুখ।
এ দিকে যৌথ প্রযোজনার দুই ছবির লড়াইয়ে অনেকটাই এগিয়ে গেছে ‘নবাব’। চিত্র-সমালোচকদের কাছে ‘পাশ মার্ক’ পাওয়ার পাশাপাশি ছবিটি পেয়েছে ‘সুপারহিট সিনেমা’র তকমা। দারুণ নির্মাণশৈলীর কারণে ঈদের প্রথম সপ্তাহ শেষেও ছবিটি রয়েছে দর্শক আগ্রহের শীর্ষে। সারাদেশে মোট ১২৯টি হলে প্রদর্শিত হচ্ছে ‘নবাব’, যেখানে হাউসফুল যাচ্ছে প্রতিটি হলই। মানবকণ্ঠের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য মতে মফস্বলের সিনেমা হলগুলো ‘নবাব’-এর দর্শকদের জায়গা করে দিতে হিমশিম খাচ্ছে। টিকিট না পেয়ে উত্তেজিত দর্শকরা বেশ কয়েকটি সিনেমা হলে ভাঙচুর পর্যন্ত চালিয়েছে।
রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সিনেমা হলগুলোতে প্রায় এক সপ্তাহের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। ‘নবাব’ দেখতে আসা দর্শকদের তাই এক সপ্তাহের জন্য মুখভার করে থাকতে হচ্ছে। অনেকেই আবার হতাশ হয়ে ফিরে গিয়ে পরিকল্পনা করছেন পরে সিনেমাটি দেখার।
মিরপুরের সনি সিনেমা হলের মালিক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘ঈদের দিনের প্রথম শো থেকে খুব ভালো ব্যবসা করছে নবাব। এভাবে চলছে অন্তত এক মাস হাউসফুল থাকবে হলগুলো। এই ছবিটি দিয়ে বাংলা সিনেমার সুদিন ফিরবে বলে আমার বিশ্বাস।’