ডিএমপি নিউজঃ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হলো পহেলা বৈশাখ ১৪২৫। পুলিশের কঠোর নিরাপত্তায় রাজধানীর প্রত্যেকটি জায়গায় উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়েছে পহেলা বৈশাখ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একদিকে যেমন কঠোর মনোভাব নিয়ে জনসাধারণের নিরাপত্তায় ডিউটি পালন করেছে,তেমনি করে আগত প্রত্যেকটি দর্শনার্থীকে ফুল ও বাতাসা দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সদস্যরা।
গতকাল শনিবার সকালে রমনার বটমূলে ছায়ানটের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হয় বর্ষবরণ। রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও রবীন্দ্র সরোবরসহ যেসব জায়গায় বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হয়েছে প্রত্যেকটি জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ছিল তৎপর। রমনা পার্কে প্রত্যেকটি গেটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সরব উপস্থিতি ও তল্লাশী করে দর্শনার্থীদের প্রবেশ করানো হয়। এছাড়াও পার্কের ভিতরে ও বাহিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল চোখে পড়ার মতো।
পহেলা বৈশাখের আরেকটি বিশেষ ইভেন্ট ছিল মঙ্গল শোভাযাত্রা। পুলিশের কঠোর প্রহরার অনুষ্ঠিত হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। কয়েক স্তরে সাজানো ছিল মঙ্গল শোভাযাত্রার নিরাপত্তা।
পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর পরিবেশে পালন করতে ডিএমপি’র গৃহীত সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনুষ্ঠানস্থলে আসা দর্শনার্থীরা। পহেলা বৈশাখের নিরাপত্তায় রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও রবীন্দ্র সরোবরসহ বেশ কিছু স্থানে ডিএমপি’র কমান্ড সেন্টার স্থাপন করা হয়েছিল। পুরো রমনা পার্ক সিসিক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা ছিল। ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে পুরো এলাকা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।এছাড়াও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, পুলিশের বিশেষ টিম সোয়াত এবং পুলিশের অন্যান্য ইউনিটের সদস্যরা প্রস্তুত ছিল পহেলা বৈশাখ উদযাপন সফল করতে।
রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও রবীন্দ্র সরোবরসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছিল নগরবাসীর ঢল। প্রত্যেকটি প্রবেশ গেটে আগত দর্শণার্থীদেরকে ফুল, বাতাসা ও পাখা দিয়ে বরণ করে নিয়েছে পুলিশ সদস্যরা। রাজধানীর আটটি পয়েন্ট থেকে বিতরণ করা হয়েছে বিশুদ্ধ পানি। মেলা প্রাঙ্গণে ছিল পুলিশের ‘লস্ট এন্ড ফাউন্ড সেন্টার’। ছিল প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী টিম ও পুলিশের ব্লাড ব্যাংক।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম-বার, পিপিএম বিকেলে ডিএমপি’র আয়োজিত বৈশাখী অনুষ্ঠান শেষে সম্মানিত নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা জানেন সন্ত্রাস এবং জঙ্গীবাদকে দমন করতে গিয়ে আমাদের অনেক সহকর্মী জীবন উৎসর্গ করেছে দেশের জন্য। যে কোন বিপদ, প্রাকৃতিক দূর্যোগে আপনাদের পাশে আমরা জীবন বাঁজি রেখে দাঁড়াই। আপনারা রাতে ঘুমান এই জন্য যে, আমরা রাতে পাহাড়া দেই বলে। আমরা আপনাদের এই সেবাটা দিব। সারাটাদিন আমাদের নিজস্ব উদ্যোগে আজকে যে আয়োজন আমরা করেছি সবকিছু উৎসর্গ করেছি আপনাদের জন্য।
তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন একটু পরেই আমাদের পবিত্র শবে মেরাজ। মুসলমান সম্প্রদায়ের অত্যন্ত পবিত্র একটি রাত। এ রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এবাদত বন্দেগী করবেন। আমরা আরো কিছুক্ষণ অনুষ্ঠান চালিয়ে যেতে চেয়েছিলাম পবিত্র শবে মেরাজের পবিত্রতার কথা চিন্তা করে আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করেছি। আশা করি আগামীতে আমরা আপনাদের জন্য এই ধরনের আরো বড়-বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করবো।এই পুলিশ আপনাদের ভাই। আপনাদের ঘরের সন্তান, আমরা মহান মুক্তিযোদ্ধের উত্তরাধিকার। আমরা সবসময় বিপদে আপনাদের পাশে ছিলাম, আমরা থাকব। আমরা যেন আপনাদের জন্য ভালো কাজ করতে পারি ক্ষমতা দেখানো না, সেবা করতে পারি, আপনাদের পাশে থাকতে পারি এবং আপনাদের ভালোবাসতে পারি।
আজকে যারা আমাদের স্পন্সার ছিলেন, মিডিয়া পার্টার ছিলেন, টাইটেল স্পন্সার ছিল, শিল্পী, কলাকৌশলী অনুষ্ঠান সঞ্চালক সবার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা রইল।সবচেয়ে কৃতজ্ঞতা আপনাদের প্রতি এই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা পালন করতে যেয়ে পুলিশ সদস্যদেরকে সহযোগীতা করেছেন, কষ্ট আনন্দের সাথে সহ্য করেছেন ও শৃংখলা রেখেছেন।
আপনাদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও আন্তরিকতা জানিয়ে আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। আমাদেরকে সহযোগিতা করার জন্য আপনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ।