ডিএমপি নিউজঃ কখনো আরমান, কখনো মুশফিকুর রহমান পরিচয়ে পদস্থ কর্মকর্তা, ঠিকাদার বা ব্যবসায়ী সেজে প্রতারণার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতের প্রকৃত নাম নাজমুল হোসেন। তার বাড়ি পিরোজপুরের আদর্শপাড়ায়।
মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ ডিএমপি নিউজকে জানান, মোহাম্মদপুরের টাউনহলে 4G লাইট হাউজের একটি ইলেক্ট্রনিক পণ্যের দোকানে আরমান নামের একব্যক্তি ঠিকাদারের পরিচয় দেন। আর দু’একদিনের মধ্যে ১১ লক্ষ টাকার পণ্য নেওয়ার কথা বলেন। এর দুদিন বাদে সকালে তিনি ওই দোকানের মালিককে ফোন দিয়ে বেশকিছু পণ্য ভাষানটেকের ঠিকানায় সরবরাহের কথা বলেন। কথা মতো ৭ লক্ষ ৩৯ হাজার ৩৪০ টাকার মালামাল দুইজন কর্মচারিসহ পিকআপে করে পাঠিয়ে দেন। পণ্য পেয়ে আরমান নামের ওই ব্যক্তি সকল মালামাল ভাষানটেকের আরেকটি ইলেকট্রিক দোকানে ডিসকাউন্টে বিক্রি করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় 4G লাইট হাউজের মালিক মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করেন।
অফিসার ইনচার্জ আরও বলেন, প্রতারণার ঘটনাটি অভিনব হওয়ায় সিনিয়র কর্মকর্তাদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। এক পর্যায়ে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ঘটনায় জড়িতকে শনাক্ত করে ২ নভেম্বর ২০২২ খ্রি. মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার হেফাজত থেকে একটি নাম্বারবিহীন প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তী সময়ে ডিএমপির নিজস্ব আসামী শনাক্ত সফটওয়্যার SIVS (Suspect Identification Verification System)-এ ফিঙ্গার দিলে তার প্রকৃত নাম নাজমুল হোসেন, পিতা-এম.ডি সফিকুল আলম, মাতা-নাজমা আক্তার ও স্থায়ী ঠিকানা পিরোজপুরের আদর্শপাড়া বলে জানা যায়। আর তার হেফাজত থেকে উদ্ধার হওয়া ড্রাইভিং লাইসেন্সে নাম- মোঃ মুশফিকুর রহমান, পিতা-জামাল বেপারী, মাতা-রূপা আক্তার ও ঠিকানা পল্লবীর কালশি লেখা, মর্মে যোগ করেন তিনি।
ওসি আরও বলেন, সে কখনো জাতীয় পরিচয়পত্র, কখনো বা জন্মসনদ ব্যবহার করে ড্রাইভিং লাইসেন্স, বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, পাসপোর্ট ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করেছে। এরপর পরিস্থিতি বুঝে কখনো পদস্থ কর্মকর্তা, কখনো ঠিকাদার বা কখনো ব্যবসায়ী সেজে প্রতারণা করে থাকে। আর এ কাজে মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য সে প্রাইভেটকারটি ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া সে Royal ARK Group নামে ভুয়া ফেসবুক পেইজে ইলেকট্রিক পণ্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে বিভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করে ২৩ টির বেশি প্রতারণা করেছে বলে স্বীকার করেছে। মোহাম্মদপুর থানায় রুজুকৃত মামলায় গ্রেফতারকৃত নাজমুল বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।