ব্যস্ততা ও সময়ের স্বল্পতার কারণে আমরা অনেকে সপ্তাহ বা মাসিক বাজার করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখি। অনেকে রান্না করা খাবার ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন। সঠিক নিয়মে খাবার সংরক্ষণ না করলে খাবার বা বাজার করা মাছ, মাংশ ও সবজি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ফ্রিজের ক্ষতি হতে পারে। তাই সঠিক উপায়ে ফ্রিজে খাবার সংরক্ষণ করছেন কি না বুঝতে নিচের টিপসগুলোর সঙ্গে মিলেয়ে দেখতে পারেন-
১. প্রথমে প্রস্তুত করা: ফ্রিজে রাখার আগে কোন খাবারটি কীভাবে রাখবেন তা প্রস্তুত করে নিন। শাক-সবজি কেটে রাখতে পারেন এতে পরবর্তীতে রান্নার কাজটি সহজ হবে। ফল, সবজি, রান্না করা মাংস, সস এগুলো প্রয়োজন অনুপাতে ভাগ করে ফ্রিজে রাখতে পারেন। যখন যে পরিমাণ প্রয়োজন ফ্রিজ থেকে বের করতে পারবেন।
২. সবজি ফ্রিজিং করার পদ্ধতিঃ সবজি কেটে ভাগ করে আইসযুক্ত কিউব ট্রেতে পানি বা অলিভ অয়েল মিশিয়ে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। টাটকা শাকসবজি ও ফলমূলের রং, গন্ধ এবং পুষ্টিমান সংরক্ষণ করতে ব্ল্যাঞ্চিং(প্রথমে ফুটন্ত পানিতে সবজিগুলো রাখার পর বরফযুক্ত পানিতে ডুবিয়ে রাখা) করে নিন।
৩. সঠিক পাত্র ব্যবহার: লিকুইড খাবার হিমায়িত হাওয়ার পর এর আয়তন বেড়ে যায় তাই বক্সে পূর্ণ করে না রেখে কিছু জায়গা খালি রাখুন। খাবার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ফ্রিজার ব্যাগের মতোই ভালো অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের পাত্র।
৪. মোড়ক পরীক্ষা করা: কোন খাবারটি ফ্রিজে রাখা যাবে এবং কত দিন রাখতে পারবেন সেটি মোড়কে লেখা নির্দেশনা দেখে নিন। কাঁচা এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার ফ্রিজে রাখা নিরাপদ। তবে কাঁচা মাংস ফ্রিজে রাখার চেয়ে রান্না করে রাখতে পারেন। তবে অবশ্যই রান্নার পর তরকারি ঠান্ডা করে নিতে হবে।
৫. ফ্রিজের খাবারের পুষ্টিগুণ ধরে রাখবেন যেভাবে–
ক. দুধের পুষ্টি বজায় রাখতে একটি বোতলে ভরে ফ্রিজের দরজার তাকে দুধ সংরক্ষণ করুন।
খ. টমেটো বেশি দিন সতেজ ও পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে প্লাস্টিকে মুড়ে ভেজিটেবিল বক্সে রাখুন।
গ. ফ্রিজের দরজায় থাকা নিদির্ষ্ট ট্রেতে ডিম রাখুন।
ঘ. ডিপ ফ্রিজের নিচে থাকা ট্রেতেই মাখন রাখুন।
ঙ. রান্না করা মাংস কয়েক দিন রাখতে চাইলে বক্সে করে ডিপ ফ্রিজে রাখুন।
চ. ফল সংরক্ষণ করতে ভালোভাবে ধুয়ে ও শুকিয়ে ছোট ছোট করে কেটে ব্যাগে সংরক্ষণ করুন।
ছ. ঢাকনাওয়ালা পাত্রে খাবার রাখুন।
৬. ফ্রিজে জায়গা বাঁচাতে: হিমায়িত খাবার সংরক্ষণে যথেষ্ট জায়গার প্রয়োজন হতে পারেন। খাবারগুলো ফ্রিজে সুসজ্জিত করে রাখতে অনেক সময় বাঁচে। যথেষ্ট বাতাস চলাচলের জায়গা নিশ্চিত করুন। জায়গা বাঁচাতে ফ্রিজার ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। একটার উপর আরেকটি ব্যাগ রাখুন।
৭. মেয়াদ দেখে নেয়া: কোন খাবারের মেয়াদ কত দিন পর্যন্ত আছে সেটি ফ্রিজে রাখার আগে দেখে নিন। পুরোনো খাবারগুলো সামনের দিকে রাখুন যাতে সেগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগে শেষ করতে পারেন। কোন কোন খাবার আপনি ফ্রিজে রেখেছেন তার একটা তালিকা করে রাখতে পারেন যাতে সেগুলো ভুলে না যান। প্রতিদিন খাবারগুলো দেখে নিন, এতে খাবার নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।
৮. ফ্রিজ পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্তঃ
সপ্তাহে একবার এক কাপ ভিনেগার, এক কাপ বেকিং সোডা ও কয়েক ফোঁটা লেমন অ্যাসেনশিয়াল অয়েল ভালোভাবে মিশিয়ে ফ্রিজ মুছে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করে নিন।