বন্যাকবলিত এলাকায় রেললাইন রক্ষাবেক্ষণ ও রেলপথের উপরে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হলে দ্রুত মেরামতের নির্দেশ দেয়িছেন রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক। এছাড়া বন্যা দুর্গতদের চিকিৎসার জন্য রেলওয়ে মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্টেশন মাস্টার কর্তৃক লাইন ক্লিয়ার আদান-প্রদান, ট্রেন রিসিভ-ডেসপ্যাচ, সান্টিং অপারেশন, লোকোমাস্টারকে লাইন ক্লিয়ার হস্তান্তর সর্বোচ্চ সতর্কতা ও গুরুত্বের সাথে পরিচালনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল রোববার রেল ভবনে দেশের চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে রেলওয়ে কার্যক্রম বিষয়ে এক বৈঠকে এই নির্দেশনা দেয়া হয়। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন, রেলওয়ের মহাপরিচালক মোঃ আমজাদ হোসেন সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।
বৈঠকে রেলমন্ত্রী বলেন, বন্যা দুর্গতদের চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া রেলপথের উপরে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হলে তা দ্রুত পুন স্থাপনের জন্য জরুরী ব্যবস্থা নেওয়া নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বন্যার পানির স্রোতে রেললাইনের উপর দিয়ে যাওয়া পিডিবি/আরইবির বৈদ্যুতিক খুটি/তার যাতে ট্রেন চলাচল ব্যাহত না করে তার প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
মো. মুজিবুল হক বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে রেলপথ, সেতু, স্টেশন ভবন, প্লাটফরম, ছাউনি, ফুটওভার ব্রীজ, ঘুমটি ঘর, গেইট বেরিয়ার, সিগনাল কেবিন, সিগনাল পোল, টেলিকম ভবন, টেলিকম টাওয়ার, বিদ্যুৎ লাইন, বিদ্যুৎ সাব-স্টেশন, ওয়ার্কশপ, লোকোসেড, ওয়াসপিট, টার্ণ টেবিল, ব্যারাক, পাম্প হাউজ, গোডাউন ও অন্যান্য স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্থ এবং ট্রেন চলাচল ব্যাহত হতে পারে। এই সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়-ক্ষতি কমানো ও নিরাপদে ট্রেন পরিচালনার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহন করা হয়েছে। এগুলো হলো- কর্মকর্তা ও সিনিয়র সাবর্ডিনেট কর্তৃক মাঠ পর্যায়ের কর্মচারীদের সুশৃংখল অপারেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করবে। রেললাইনে খোয়া, পাথর, মালামাল বা জ্বালানী পরিবহনের জন্য সরবরাহকারী ট্রেন প্রস্তুত রাখা, জরুরী প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য বাঁশ, চাটাই, রশি, স্টিল ওয়্যার, বালি, বোল্ডার, পলিব্যাগ, সিমেন্ট ব্যাগ ও অন্যান্য সামগ্রি সংগ্রহ ও মজুত রাখা হয়।
রেলমন্ত্রী বলেন, বন্যাকবলিত এলাকার তথ্য দ্রুত জানান জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম, পাকশী ও লালমনিরহাট বিভাগীয় ট্রেন কন্ট্রোল অফিসে এবং সিআরবি (চট্টগ্রাম) ও রেলভবন (রাজশাহী) জোনাল কন্ট্রোল অফিসে অপারেটিং কর্মকর্তাদের তত্বাবধানে জরুরী মনিটরিং সেল স্থাপন করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে প্রকৌশল বিভাগের কর্মচারী ও কর্মকর্তাগণ রেললাইন, ব্রীজ-কালভার্ট এবং নদ-নদীর পানির অবস্থা প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করা। তাদের নিকট থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে বিভাগীয় পর্যায়ে ট্রেন চলাচল সম্পর্কিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। প্রয়োজনে সম্ভাব্য দুর্ঘটনা প্রতিরোধে চলমান ট্রেনের চলাচল সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিশেষ জরুরী প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনা বাহিনী, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, স্থানীয় প্রশাসন, আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অন্যান্য বিভাগ/সংস্থার সহায়তা কামনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।বিবি/০১