দেশের স্মার্টফোনের বাজার দখলে এক ধরনের লড়াই চলছে ‘ব্র্যান্ড স্মার্টফোন’গুলোর মধ্যে। বছরের প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি–মার্চ) তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল–জুন) বাজারে স্মার্টফোনের বিক্রি বেড়েছে। প্রবৃদ্ধির ধারায় রয়েছে মোট স্মার্টফোনের বিক্রির পরিমাণ (পিস হিসাবে)ও টাকার দিক দিয়েও।
বছরের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকে বৈধ পথে (আমদানি করা) দেশে আসা স্মার্টফোনের ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে দারুণ একটা লড়াই দেখা যাচ্ছে। লড়াইয়ে শীর্ষে রয়েছে স্যামসাংয়ের স্মার্টফোন। অন্যদিকে, নতুন ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে উঠে আসছে শাওমি। বিক্রির পরিমাণ ও টাকার হিসাবে দু’টি ব্র্যান্ডের অবস্থানই ঈর্ষণীয় বলে বিভিন্ন নথি দেখে জানা গেছে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ মোবাইলফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্যামসাং মোবাইলফোনের অন্যতম পরিবেশক ফেয়ার ডিস্ট্রিবিউশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুহুল আলম আল মাহবুব বলেন, ‘মানুষের রুচিতে পরিবর্তন এসেছে। সৌখিনতাও বেড়েছে। ফলে মানুষ চাহিদার সঙ্গে রুচি ও সৌখিনতার সমন্বয়ে এখন মোবাইলফোন কিনছেন। এ কারণে স্মার্টফোনের বাজার বড় হচ্ছে।’
বাজার প্রতিযোগিতায় স্যামসাং মোবাইলফোনের অবস্থানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘স্যামসাং একটি সুপরিচিত ব্র্যান্ড। এর স্মার্টাফোনগুলো মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। একই সঙ্গে স্মার্টফোন ব্যবহারের রুচি তৈরিতেও ভূমিকা রেখেছে। এ কারণে স্যমসাং সবার শীর্ষে।’
সম্প্রতি স্মার্টফোন আমদানির একটি নথি থেকে জানা গেছে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশে আমদানি হয়েছে মোট ১০ লাখ ৩৭ হাজার ৯৭৮ পিস স্মার্টফোন। এর মধ্যে ১০ হাজার টাকার বেশি দামের রয়েছে ৪ লাখ ৭৩ হাজার ১১১ পিস । অন্যদিকে ১০ হাজার টাকার নিচে রয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৮৬৭ পিস স্মার্টফোন। এসব ফোনের মোট বাজার মূল্য ৭৫৫ কোটি ৮২ লাখ ২৬ হাজার ১৫৩ টাকা।
অন্যদিকে, বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশে স্মার্টফোন আমদানি হয়েছে ১০ লাখ ৭৭ হাজার ৭৮৭ পিস। যার মধ্যে ১০ হাজার টাকার বেশি দামের স্মার্টফোন রয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার ৮৪৩ পিস। আর ১০ হাজার টাকার কম দামের স্মার্টফোনের সংখ্যা ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৯৪৪ পিস। এসব ফোনের মোট বাজারমূল্য ৮৭৫ কোটি ১১ লাখ ৩৪ হাজার ৮৪৯ টাকা।
দেখা গেছে, প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১০ হাজার টাকার নিচের দামের স্মার্টফোনের চাহিদা কমেছে। বেশি সুবিধা সম্পন্ন নতুন নতুন মডেলের স্মার্টফোনের দাম বেশি হলেও সেদিকে ঝুঁকেছেন ক্রেতারা। বিশেষ করে ঈদ উল ফিতরের আগে স্মার্টফোনের চাহিদা বেড়ে যায় বলে বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। বাংলাদেশ মোবাইলফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিআইএ) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক জানান, গত ঈদের আগে স্মার্টফোনের চাহিদা বেড়ে গিয়েছিল। মানুষ এখন ঈদের কেনাকাটায় স্মার্টফোন অন্তর্ভুক্ত করায় বিক্রি বেড়েছে বলে তিনি মনে করেন।