খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ‘বিশ্ব খাদ্য দিবসের উদ্দেশ্য হলো ক্ষুধা, অপুষ্টি ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলা, কৃষির উন্নতিতে মনোযোগ দেয়া, কৃষিভিত্তিক উৎপাদনে উৎসাহ দেয়া, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সহায়তা গ্রহণে উৎসাহ প্রদান, গ্রামীণ মানুষ, মূলতঃ মহিলা ও কম উন্নত মানুষদের অবদানে উৎসাহ দান, প্রযুক্তির সমৃদ্ধিকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ছড়িয়ে দেওয়া। ‘আমাদের কর্ম আমাদের ভবিষ্যৎ, পুষ্টিকর খাদ্যেই হবে আকাঙ্খিক্ষত ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী’ প্রতিপাদ্যটি যথার্থ ও সময়োচিত হয়েছে।
মন্ত্রী সকালে রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) চত্বরে অনুষ্ঠিত ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস ও খাদ্য মেলা ২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘ব্যক্তি জীবন থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ভবিষ্যৎ গড়তে দরকার ধীশক্তি সম্পন্ন ও অসীম সাহসী নেতা এবং সময়োপযোগী পরিকল্পনা। আর সে পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিতে দরকার কঠোর পরিশ্রম। এ উপলব্ধি থেকেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান জেল থেকে ফিরে এসেই ক্ষতিগ্রস্থ হাজার হাজার পরিবারের পূনর্বাসন, আর্থিক, কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পুনরুজ্জীবিত করার কাজে মনোনিবেশ করেন।’
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কৃষি প্রধান এদেশে কৃষিকে অগ্রাধিকার দিয়ে যাত্রা শুরু করেন, যা তার কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অব্যাহত রেখেছেন। কৃষিবান্ধব নীতি ও কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশ এখন দানা জাতীয় শস্য, সবজি, মাছ ও মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বে ধান উৎপাদনে চতুর্থ, সবজি উৎপাদনের তৃতীয়, আলু উৎপাদনে অষ্টম, আম উৎপাদনের সপ্তম। সরকার খাদ্য উৎপাদন ও প্রাপ্যতা বাড়াতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনাই ২০১৬ সাল থেকে দেশের দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর ৫০ লাখ পরিবারের মধ্যে বছরের কর্মভাবকালীন পাঁচ মাস প্রতি কেজি ১০ টাকা দরে মাসে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এটিই হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সামাজিক খাদ্য নিরাপত্তা বেষ্টনী।’
মেলায় সরকারি ও বেসরকারি ৪৬ টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮ পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন থাইল্যান্ডের মাহিডল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. ভিসিথ চাভাসিট। বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, কৃষিবিদ ও সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এফএও বাংলাদেশের প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্ঠি ও খাদ্য বিঞ্জান বিভাগের অধ্যাপক নাজমা শাহীন, আইসিডিডিআরবির সিনিয়ন পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ, কৃষি মন্ত্রণালয় ও অধীনন্থ বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিজ্ঞানী প্রমুখ সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।