এতে বলা হয়েছে, দেশে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৫৩ শতাংশ। আর রফতানির পরিমাণ বেড়েছে ১৩৫ গুণ। দেশে মাথাপিছু মাছ খাওয়ার পরিমাণও বেড়ে শতভাগে দাড়িয়েছে। ২০২২ সাল নাগাদ বিশ্বের চারটি দেশ মাছ চাষে বিপুল সাফল্য অর্জন করবে। এর মধ্যে প্রথম দেশটি হবে বাংলাদেশ। তবে দেশে বদ্ধ জলাশয়ে মাছের উৎপাদন বাড়লেও মুক্তভাবে মাছ উৎপাদন কমেছে।
এফএও-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি উদ্যোগ এবং মৎস্যজীবীদের কঠোর পরিশ্রমের কারণে মাছ উৎপাদনের নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। মাছ উৎপাদনে বাকি শীর্ষ তিনটি দেশ হলো চীন, ভারত ও মিয়ানমার। ২০০৬ সালে ভারতকে টপকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ অর্থনৈতিক শুমারি অনুযায়ী, চাষ করা মাছের পরিমাণ তিন দশকে তিন রকম। এর মধ্যে ১৯৯০ সালে ১ লাখ ৯৩ হাজার টন। ২০০০ সালে ছিল ৬ লাখ ৫৭ হাজার টন। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ১০ লাখ টন। এসব উৎপাদন মূলত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ের নদী, সুন্দরবন, কাপ্তাই লেক, বিল ও প্লাবন ভূমি এবং বদ্ধ জলাশয়ের মধ্যে পুকুর, মৌসুমি চাষকৃত জলাশয়, বাওড় ও চিংড়ি ঘের থেকে উৎপাদিত হয়ে থাকে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক বলেছেন, ‘বর্তমান সরকারের যথাযথ উদ্যোগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৬৮ হাজার ৩০৫ মেট্রিক টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রফতানি করা হয়েছে। এতে সরকারের আয় হয়েছে চার হাজার ২৮৭ কোটি টাকা।’ ২০০৮-০৯ অর্থবছরে দেশে মাছের উৎপাদন ছিল ২৭ লাখ ৪১ হাজার মেট্রিক টন। মৎস্যবান্ধব সরকারের উন্নয়নমুখী বহুবিধ উদ্যোগ ও সেবায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মাছের উৎপাদন ৩৮ লাখ ৭৮ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে।
মৎস্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে পোনা অবমুক্তকরণ, বিল নার্সারি স্থাপন ও মৎস্য অভয়াশ্রম স্থাপন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, উন্মুক্ত জলাশয়ে পোনা অবমুক্তকরণের ফলে ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মোট ৭১৫টি বিল নার্সারি স্থাপন করা হয়। ২০১৫-১৬ অর্থবছরেই স্থাপন করা হয়েছে ২০৬টি। এর মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত মাছ উৎপাদন হচ্ছে এবং এসবে অনেক বিপন্ন প্রায় মাছের আবির্ভাব ঘটেছে। এছাড়া গত ৫ বছরে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন নদ-নদী ও অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে ৫৩৪টি অভয়াশ্রমসহ দেশব্যাপী প্রায় ৫৫০টি অভয়াশ্রম স্থানীয়ভাবে পরিচালতি হচ্ছে। এসব অভয়াশ্রমে চিতল, ফলি, বামোস, কালিবাউস, আইড়, টেংরা, মেনি, বউরাণী, সরপুটি, মধু পাবদা, রিটা, গজারসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের উৎপাদন বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।