স্পেনের মূল ভূখণ্ডের সাথে লাগোয়া জিব্রাল্টার প্রায় ৩০০ বছর ধরে ব্রিটেনের শাসনাধীন। কিন্তু স্পেন কখনই ভূমধ্য সাগর তীরের এই পোতাশ্রয়টির দাবি ছাড়েনি। মাঝে মধ্যেই তারা ক্ষুদ্র এই ভূখণ্ড ফেরত দেওয়ার দাবি করেছে।
ব্রিটেন যখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, ঠিক সে সময় স্পেন জিব্রালটারের নিয়ন্ত্রণ চেয়ে নতুন করে চাপ বাড়িয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে স্পেনের সরকার বলেছেন ব্রিটেনের সাথে ব্রেক্সিট নিয়ে আপোষ মীমাংসায় জিব্রালটারের নিয়ন্ত্রণের ইস্যুটি শর্ত হিসাবে জুড়তে হবে। খবর : বিবিসি বাংলা
আর এই খবর বেরিয়ে পড়ার পর, ব্রিটেনের রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। অনেক ব্রিটিশ রাজনীতিকের কথায়, অনেক দক্ষিণপন্থী সংবাদপত্রের লেখায় যুদ্ধের ভাষা ব্যবহৃত হচেছ।
ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির সাবেক নেতা এবং পার্লামেন্টের লর্ড সভার প্রভাবশালী সদস্য মাইকেল হাওয়ার্ড হুঁশিয়ার করেছেন ফকল্যান্ডসের মত জিব্রাল্টারকে রক্ষায় যুদ্ধে যেতেও পিছপা হবে না তার দেশ।
রবিবার টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে মি হাওয়ার্ড বলেন, “৩৫ বছর আগে এক নারী প্রধানমন্ত্রী (মার্গারেট থ্যাচার) একদল ব্রিটিশ নাগরিককে রক্ষায় পৃথিবীর অর্ধেক দূরত্বে স্প্যানিশ ভাষাভাষী এক দেশের বিরুদ্ধে সৈন্য পাঠিয়েছিলেন, আমি নিশ্চিত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী (টেরিজা মে) আরেকটি স্প্যানিশ ভাষাভাষী দেশের কবল থেকে ব্রিটিশ জনগণের রক্ষায় একই কাজ করবেন। “
১৯৮২ সালে আর্জেন্টিনার কাছ থেকে ফকল্যান্ডস দ্বীপ পুনর্দখলের যুদ্ধে ২৫৫ জন ব্রিটিশ সৈন্য প্রাণ হারিয়েছিলো। ঐ যুদ্ধে আর্জেন্টিনার ৬৫৫ জন সৈন্য মারা গিয়েছিলো।
মি. হাওয়ার্ডের মত একজন সিনিয়র রাজনীতিকের গলায় এরকম বক্তব্যে ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন স্পেন।
স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলফোনজো দাসতিস মন্তব্য করেছেন, “মনে হচ্ছে, কারে কারো ধৈর্যচ্যুতি ঘটছে। “
ব্রিটেনের ইউরোপ পন্থি রাজনীতিকরাও এ ধরণের ভাষা ব্যবহারের সমালোচনা করছেন।
বিরোধী লিবডেম নেতা টিম ফ্যারন বলেছেন, “অল্প কদিনের মধ্যেই কনজারভেটিভ কট্টরপন্থীরা একটি বন্ধু দেশকে শত্রুতে পরিণত করছে। “
ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য মি হাওয়ার্ডের এই যুদ্ধংদেহী মনোভাবের কোনো সমালোচনা করা হয়নি। বরঞ্চ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইকেল ফ্যালন বলেছেন, জিব্রালটারকে রক্ষায় সবকিছু করবে ব্রিটেন।