প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালের ১৮-২০ এপ্রিল ভুটান সফর করেন। উক্ত সফর কালে সরকারের পক্ষ থেকে ভুটান হেলথ ট্রাস্ট ফান্ডকে এক বছরের (২০১৯ সন) অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ সরবরাহের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। এরই প্রেক্ষিতে ভুটান এর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২০১৯ সালে ব্যবহার উপযোগী তাদের প্রয়োজনীয় ৪২৯ টি ওষুধের চাহিদা পত্র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠান। ওষুধ সরবরাহের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য উক্ত তালিকাটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। উক্ত তালিকা পাওয়ার পর ভুটানে প্রেরণের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ সংগ্রহের নিমিত্তে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তথ্য সূত্র ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সাথে আলোচনা পূর্বক ওষুধ সংগ্রহের উদ্যোগ নেন। প্রধানমন্ত্রীর এই মহতী ও মানবিক উদ্যোগকে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতি স্বাগত জানায় এবং তা বাস্তবায়নের জন্য সক্রিয় ভাবে এগিয়ে আসে।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ওষুধ শিল্প সমিতির সাথে আলোচনা পূর্বক ২০১৯ সালের জন্য বাংলাদেশে নিবন্ধিত ২৫৮ টি জেনেরিকের ওষুধ বিনামূল্যে ভুটানে প্রেরণের উদ্দেশ্যে সংগ্রহ করে। ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২৯ ডিসেম্বর ভুটান হতে ৫ (পাঁচ) সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে। সফরকালে ভুটানি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দুটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় ভূটান সরকারের চাহিদা অনুযায়ী সংগ্রকৃত ওষুধসমূহ ৩ (তিন) কিস্তিতে বুড়িমাড়ী স্থলবন্দর দিয়ে প্রেরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
যার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া প্রতিশ্রুতির ২০ কোটি টাকার বিনামূল্যের ২৫৮ ধরণের ওষুধ গত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ প্রথম কিস্তি গত ৮ নভেম্বর দ্বিতীয় কিস্তি এবং সর্বশেষ ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ শেষ চালানটি ভুটান কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরে শেষ চালানটি হস্তান্তর করে ওষুধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষ।
এতে বাংলাদেশ সরকারের পাঁচ সদস্যের দলের নেতৃত্ব দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আব্দুল ওহাব খান ও ভুটানের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সোনম দাওয়া। বাংলাদেশের পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ওষুধাগারের সহকারী পরিচালক ড. নাসের ইকবাল, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ ইয়াহইয়া, পাটগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাবুল, এসেনশিয়াল ড্রাগ কোম্পানি লিমিটেডের বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের ম্যানেজার রিয়াদ আরেফিন, বুড়িমারী স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার (এসি) একেএম খায়রুল বাশার, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষে উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম ও লালমরিহাট ওষুধ প্রশাসনের ড্রাগ সুপার তৌহিদুল ইসলাম।
ওষুধের মতো জীবন রক্ষাকারী পণ্য দিয়ে ভুটান সরকারকে সহায়তা করায় প্রধানমন্ত্রী একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এই মানবিক সহায়তার ফলে দুই দেশের বন্ধন আরও সুদৃঢ় হয়েছে। মাদার অব হিউম্যানিটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর এই মহতী উদ্যোগকে ভুটান সরকার ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে। আজ ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে এ সব তথ্য জানিয়েছেন।