আগেকার যুগের মানুষের তুলনায় ইদানিংকার মানুষকে খুব অল্প বয়সেই বুড়িয়ে যেতে দেখা যায়! বয়স ৩০ পার হতে না হতেই দেহ ও ত্বকে পড়ে যায় বয়সের ছাপ। শরীরে চলে আসে বার্ধক্য।
সবাই তারুণ্যের স্বাদ দীর্ঘদিন পেতে চায়। কিন্তু একটা সময় চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ পড়তে থাকে, এটি প্রকৃতিরই নিয়ম। তবে অনেকে অকালে বুড়িয়ে যায়। বেশ কিছু অভ্যাসের কারণে মানুষ দ্রুত বার্ধক্যের দিকে ধাবিত হয়।
আসুন চেহারায় তারুণ্য ধরে রাখার কিছু উপায় জেনে নিই-
ধুমপান ও অ্যালকোহল: মাত্রাতিরিক্ত অ্যালকোহল পানে মানুষ তাড়াতাড়ি বার্ধক্যের দিকে ধাবিত হয়। এছাড়া মস্তিষ্কও কার্যকারিতা হারায়। এ কারণে নিজেকে ফিট রাখতে হলে অ্যালকোহল পরিহার করতে হবে।
মানসিক চাপ ও হতাশা: মনে আনন্দ না থাকলে কুড়িতেই মানুষ বুড়ো হয়ে যায়। অতিরিক্ত মানসিক চাপ জীবন বিষিয়ে দেয়। দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ শরীরের কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত করে। এতে ত্বকে স্বজীবতা নষ্ট হয়ে যায়। চুল পাকতে শুরু করে। ত্বকের ছাপ পড়তে থাকে। তাই বেশি দিন বাঁচতে হলে এবং তারুণ্য ধরে রাখতে হরে মানসিক চাপ ও হতাশা কমাতে হবে। এজন্য নিয়মিত খেলা, ব্যায়াম ও মেডিটেশনের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
দেরি করে শোয়া: নিয়মিত অন্তত ৬ ঘণ্টা ঘুম প্রতিটি মানুষের সুস্থতার জন্য জরুরি। যারা রাত জাগে তাদের নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। রোজ দেরি করে বিছানায় গেলে মানসিক প্রশান্তি নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে রাতে দ্রুত বিছানায় যেতে হবে, ৬ ঘণ্টা নির্বিঘ্ন ঘুম দরকার।
উপুড় হয়ে ঘুমানো: অনেকেরই এই অভ্যাস রয়েছে। কিন্তু উপুড় হয়ে ঘুমানে মুখ বেকায়দাভাবে বালিশের ওপর থাকে যা ত্বকে রিংকেল পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ।
রোদে ঘোরাঘুরি: সূর্যের অতিবেগুণী রশ্মি ত্বকের যতোটা ক্ষতি করে অন্য কোনো কিছুই এতোটা ক্ষতি করতে পারে না। আপনি যদি সানস্ক্রিন না লাগিয়ে বেশি রোদে ঘোরাঘুরি করেন তাহলে বয়স ৩০ পার হতে না হতেই ত্বকে দেখা দেবে বয়সের ছাপ। এছাড়াও সানগ্লাস ব্যবহার না করার কারণে দৃষ্টিশক্তিরও সমস্যা দেখা দেয়।
বেশিক্ষণ বসে থাকা: বেশিক্ষণ বসে থাকলে শরীরে রোগ বাসা বাধে, আয়ু কমে। যদি কেউ দীর্ঘ সময় অলস জীবনযাপন করে তাহলে তার চেহারায় পার্থক্যটা সহজেই ফুটে ওঠে। তখন তাকে বয়সের চেয়ে বেশি বয়স্ক দেখায়। এ কারণে নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে, নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে। শরীর ফিট রাখতে কায়িক শ্রম দিতে হবে।
পরিশ্রম না করা: গবেষণায় জানা যায় প্রতিবছর ধূমপানের ও মদ্যপানের কারণে যতো মানুষ মৃত্যুবরণ করেন ঠিক ততো মানুষই অলসতা ও অপরিশ্রমী হওয়ার জন্য করে থাকেন। শুনতে অবাক শোনালেও এটি সত্যি। শারীরিক পরিশ্রম করার মাধ্যমে নানা রোগ ও শারীরিক সমস্যা দেহে বাসা বাঁধতে পারে না। কিন্তু দেহে অলসতা থাকলে কিংবা বসা কাজের কারণে শারীরিক পরিশ্রম না করতে দেহ বার্ধক্যের দিকে যেতে থাকে।
খাদ্যাভাস: সুস্থ থাকার জন্য এবং ত্বক সুস্থ রাখতে দৈনিক খাবার তালিকায় তাজা ফলমূল ও শাকসবজি রাখতে হবে। দানাদার খাবারও রাখা চাই। এছাড়া তারুণ্য বজায় রাখতে রেড মিট, চিনি জাতীয় খাবার এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার পরিহার করা উচিত। এজন্য একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন, আর নিজেকে তরতাজা রাখুন।
এতে করে অল্প বয়সেই আপনাকে বেশ বয়স্ক মনে হয়। এছাড়াও খাবার হজমে সমস্যা এবং মেরুদণ্ডের ক্ষতি তো রয়েছেই। তাই সাবধান হওয়া বিশেষ প্রয়োজন।