ডিএমপি নিউজঃ রাজধানীর কোতয়ালী ও ধানমন্ডি এলাকা থেকে ১৩০০০ পিস অক্সি-মরফোনসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। গ্রেফতারকৃতদের নাম মোঃ আলমগীর সরকার ও জাহিদুল ইসলাম।
শুক্রবার (১৯ নভেম্বর, ২০২১) ধারাবাহিক অভিযানে কোতয়ালী থানার বাবু বাজার এলাকা ও সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ধানমন্ডি শাখায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ডিবি লালবাগ বিভাগের কোতয়ালী জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার মোঃ সাইফুর রহমান আজাদ ডিএমপি নিউজকে জানান, কতিপয় ব্যক্তি বাবু বাজার এলাকায় বিপুল পরিমাণ অবৈধ মাদকদ্রব্য অক্সি-মরফোন বিক্রয়ের জন্য অবস্থান করছে মর্মে তথ্য পাওয়া যায়। এমন তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার (১৯ নভেম্বর, ২০২১) বিকাল ৪:৪৫ ঐ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর সময় অক্সি-মরফোনসহ আলমগীর ও জাহিদুলকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের হেফাজত হতে ২০০০ পিস অক্সি-মরফোন উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্য মতে একইদিন রাত ৭:৫০ টায় সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ধানমন্ডি শাখায় অভিযান চালিয়ে আরও ১১০০০ পিস অক্সি-মরফোন উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, অক্সি-মরফোন হলো মরফিনের একটি এনালগ, যা একটি এনালজেসিক ড্রাগ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এটি ইনজেকশন থেকে ওরাল ফর্মে নিয়ে আসা হয়েছে। এটি মূলত কাজ করে Central Nurve System এ (ব্রেইনে)। তীব্র ব্যথানাশক হিসেবে ক্যান্সার, হার্ট, দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত মৃত্যু পথযাত্রী রোগীর তীব্র ব্যথা কমানোর জন্য ব্যবহার করা হয়।
অক্সি-মরফোন একটি ইউফোরিক ড্রাগ। যা মস্তিষ্কে প্রচন্ড আনন্দ অনুভূতি তৈরি করে। শরীরে সাময়িকভাবে দুঃখ-কষ্ট, ব্যথা ভুলিয়ে দেয়। ব্যথার সিগনাল গিয়ে মস্তিষ্ককে উত্তেজিত করতে পারে না। মস্তিষ্ক বোধহীন অসাড় হয়ে যায়। মূলত মাদকসেবীরা অক্সি-মরফোন গুড়ো করে যেকোন সিরাপ বা পানীয় এর সাথে মিক্স করে খেয়ে ফেলে। যুব সমাজ (Young Generation) বিশেষ করে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের ব্যাপক ব্যবহার গোয়েন্দাদের নজরে এসেছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ঔষধ বিক্রয় ও বাজারজাত করার অনুমোদন দেয়। যা নির্দিষ্ট কোম্পানির নিকট হতে লাইসেন্স প্রদর্শনপূর্বক পরিবহনের রুট প্রদর্শন করে এবং কার কাছে বিক্রয় করা হবে তা প্রদর্শন করে গ্রহণ এবং বিক্রয় করতে হয়। প্রচণ্ড পরিমাণে ভয়ঙ্কর ড্রাগ হওয়ায় কোম্পানিগুলো তাদের প্রচলিত মার্কেটিং চ্যানেল ব্যবহার করে, এর বিপণন নিষিদ্ধ আছে। তারপরও এতো বিপুল সংখ্যক ড্রাগ আসামীদের কাছে কীভাবে এলো তা তদন্তাধীন রয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা বিপুল পরিমাণে ভয়ঙ্কর এই ড্রাগ সংগ্রহ করে মাদকসেবীদের কাছে যত্রতত্র বিক্রয় করতো বলে জানান গোয়েন্দা এ কর্মকর্তা।
গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় নিয়মিত মামলা রুজু হয়েছে বলে জানান গোয়েন্দা এ পুলিশ কর্মকর্তা।