ডিএমপি নিউজ: রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকা থেকে হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী (হুজি) এর অপারেশন শাখার প্রধানসহ ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো-মোঃ মাইনুল ইসলাম ওরফে মাহিন ওরফে মিঠু ওরফে হাসান, শেখ সোহান স্বাদ ওরফে বারা আব্দুল্লাহ ও মুরাদ হোসেন কবির। এ সময় তাদের নিকট হতে ০১ টি প্রাইভেটকার, ০৫ টি মোবাইল ফোন, ০১ টি মাইক্রোফোন, ০১ টি চাপাতি, ০২ টি ছোড়া, ১০ টি ডেটোনেটর, ১৭০ টি বিয়ারিং লোহার বল, ০১ টি স্কচটেপ, ০৫ লিটার এসিড, ০৩ টি আইডি কার্ড ও ০১ টি জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ, ২০২১) বিকাল ৫.১৫ টায় যাত্রাবাড়ী থানার সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, তারা “হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী”এর সক্রিয় সদস্য। তারা মাইনুল ইসলাম এর নেতৃত্বে হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী পুনর্গঠন, পূর্ণাঙ্গ শুরা কমিটি প্রস্তুত করণ, সংগঠনের অর্থ দাতা এবং সদস্যদের নিকট থেকে অর্থের যোগান নিশ্চিত করণ, ব্যাপক হারে সংগঠনের রিক্রুটমেন্ট করণ, অস্ত্র সংগ্রহ, বোমা তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ, কারাগারে আটক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের জামিনের ব্যবস্থাকরণ, বান্দরবান-নাইক্ষ্যংছড়ি পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় জমি লিজ নিয়ে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করার কাজে নিয়োজিত ছিলো। তারা বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় তাদের সংগঠনের বিস্তার ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন পরিচয়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল। তারা কারাগারে আটক ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডাক্তার জাফর ও ২০০০ সালের কোটালিপাড়ায় তৎকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টা মামলার যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামি মেহেদী হাসান ওরফে আব্দুল ওয়াদুদ ওরফে গাজী খানের নির্দেশে সাংগঠনিক কাজ করছিলো।
গ্রেফতারকৃত মাইনুল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবত নিষিদ্ধ সংগঠন হুজি’র প্রধান অপারেশন সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছিলো। সে সাংবাদিকতার বেশ ধারণ করে সংগঠনের দাওয়াতি কাজ, অর্থ সংগ্রহ, বোমা তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ করে আসছিলো। তার পরিকল্পনা ছিলো ঢাকা শহরে বড় ধরনের নাশকতা করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা। সে ২০১৫ সালে হুজি’র শীর্ষ নেতা কারাবন্দি মুফতি মঈনউদ্দিন ওরফে আবু জান্দালকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলো।
অপর গ্রেফতারকৃত সোহান স্বাদ সুনামগঞ্জ’র বিবিয়ানা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে। সে ঢাকায় মিরপুর বাংলা কলেজে পড়ার পাশাপাশি একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতো। ২০১৬ সালে একুশে বই মেলায় নাশকতার ঘটনায় গ্রেফতার হয়। এছাড়াও সে ২০১৭ সালে বিষ্ফোরক মামলায় এবং ২০১৯ সালে সন্ত্রাস বিরোধী আইনের একটি মামলায় গ্রেফতার হয়। জামিনে বের হয়ে সে মাইনুলের নেতৃত্বে হুজির সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করতো। গ্রেফতারকৃত মুরাদ হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী’র সক্রিয় সদস্য। সে ব্যবসার আড়ালে হুজি সংগঠনের দাওয়াতি ও বায়তুল মালের দেখভালের দায়িত্ব পালন করতো।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।