এবার লক্ষ্য শনি৷ তবে বিস্তারিত ভাবে বললে, ঠিক শনি নয়৷ শনির উপগ্রহ টাইটানে নামতে চলেছে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার স্পেস ক্রাফ্ট ৷ সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৬ সালেই টাইটানের মাটি ছোঁবে রোটরক্রাফ্ট ড্রাগনফ্লাই৷ বৃহস্পতিবার এমনই ঘোষণা করেছে নাসা ৷
নাসা জানিয়েছে টাইটানের পরিবেশের সঙ্গে বেশ মিল রয়েছে পৃথিবীতে প্রাণের গঠন হওয়ার সূচনা পর্বের৷ ফলে টাইটানেও থাকতে পারে প্রাণের সন্ধান৷ এমনই মনে করছেন নাসার বিজ্ঞানীরা৷ ২০২৬ সালে যাত্রা শুরু করে ড্রাগনফ্লাই শনির ‘চাঁদে’ গিয়ে পৌঁছবে ২০৩৪ সালে৷
বিজ্ঞানীদের ধারণা পৃথিবী ও টাইটানের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ধারা অনেকটা এক৷ ফলে কোনও না কোনও প্রাণের সন্ধান সেখানে মিলতে পারে, এমনই মনে করছেন তাঁরা৷ নাসাকে উদ্ধৃত করে এই খবর জানিয়েছে সংবাদসংস্থা জিংহুয়া৷
টাইটান সৌরজগতে দ্বিতীয় বৃহত্তম চাঁদ বা উপগ্রহ৷ টাইটান জুড়ে রয়েছে পুরু বরফের আস্তরণ৷ তাকে ঘিরে রয়েছে নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ এক সোনালি বর্ণের আস্তরণ৷ যার ঘনত্ব পৃথিবীর তুলনায় প্রায় চারগুণ ভারি ও পুরু৷ এই মাটিতেই নামার কথা ড্রাগনফ্লাইয়ের৷
নাসা জানাচ্ছে এই ড্রাগনফ্লাই মূলত ড্রোন জাতীয় স্পেসক্রাফট৷ যাতে রয়েছে আটটি রোটরস বা ঘূর্ণমান চাকা৷ টাইটানের মাটিতে জলের মধ্যে কি ধরণের রাসায়নিক রয়েছে, তা পরীক্ষা করে দেখার কথা ড্রাগনফ্লাইয়ের৷
নাসার অ্যাসোসিয়েট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ফর সায়েন্স থমাস জুরবুচেন জানান, টাইটানে জৈব যৌগের ভাণ্ডার রয়েছে বলে ধারণা আমাদের৷ সেই সন্ধানেই ড্রাগনফ্লাইয়ের যাত্রা৷ জীবনে শুরু কোথা থেকে হয়, তা শেখাতে পারে এই অভিযান৷
রোটরক্রাফট টাইটানের মাটিতে ঘুরে বেড়াবে প্রায় ১৭৫ কিমি সীমানার মধ্যে৷ বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করবে নমুনা৷ এক ধাপে এই রোটরক্রাফ্ট পাড়ি দিতে পারে ৮ কিমি৷ ফলে দ্রুত নমুনা সংগ্রহে সক্ষম ড্রাগনফ্লাই৷
এর আগে ২০১৮ সালে সূর্যে পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল নাসার ‘টাচ দ্য সান’ মিশনের৷ ফ্লোরিডা থেকে ওই স্পেসক্রাফ্টটের মহাকাশে পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল৷ কোনও যান্ত্রিক গোলোযোগের জন্য থেমে যায় সেই অভিযান।
নাসার তরফ থেকে জানানো হয়, জ্বলন্ত সূর্যের আবহাওয়া সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে তার ৬০ লক্ষ কিলোমিটার দূর দিয়ে প্রদক্ষিণ করবে এই মহাকাশযান। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘সোলার প্রোব প্লাস মিশন’। পৃথিবী থেকে ১৫ কোটি কিলোমিটার দূরে থাকা সূর্যের কাছে গিয়ে ওই যান জেনে আসবে যে, কেন সূর্যের আবহাওয়া যতটা উত্তপ্ত, সূর্যের তল ততটা নয়। এর আগে এত কাছে যায়নি কোনও স্পেসক্রাফট। তবে আপাতত স্থগিত রয়েছে সেই মিশন৷