ওয়ার্নারের সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ দাড়ায় ৩০৭। তবে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় পেরে ওঠেনি পাকিস্তান। টনটনে বুধবার ৪১ রানে জিতেছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। বিশ্বকাপে অ্যারন ফিঞ্চের দলের এটি তৃতীয় জয়।
ইমাম-উল-হক ও মোহাম্মদ হাফিজের ব্যাটে দৃঢ় ভিতের ওপর দাঁড়ানো পাকিস্তান খেই হারায় মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায়। লোয়ার অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে সরফরাজ আশা জাগালেও ২৬৬ রানে গুটিয়ে যায় তারা।
আগের ম্যাচে সংগ্রাম করা ওয়ার্নার শুরু থেকে ছিলেন আক্রমণাত্মক। মন্থর শুরু করা ফিঞ্চ ২৬ ও ৪৪ রানে দুবার ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান। ৬৩ বলে ফিফটি করার পর রানের গতি বাড়ান অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক।
দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে ১৪৬ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন আমির। ৮৪ বলে ছয়টি চার ও চারটি ছক্কায় ৮২ রান করে ফিরেন ফিঞ্চ। এরপর আর তেমন কোনো জুটি গড়তে পারেনি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
এসেই চড়াও হওয়া গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে বোল্ড করার পর ওয়ার্নারকে থামান শাহিন শাহ আফ্রিদি। ৫১ বলে ফিফটি করা ওয়ার্নার ১০২ বলে তুলে নেন ১৫তম সেঞ্চুরি। বাঁহাতি ওপেনারের ১১১ বলে খেলা ১০৭ রানের ইনিংস গড়া ১১ চার ও এক ছক্কায়।
দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় থাকা উসমান খাওয়াজা ও শন মার্শকে পরপর দুই ওভারে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে বড় একটা ধাক্কা দেন আমির। শেষে অ্যালেক্স কেয়ারি ও মিচেল স্টার্ককে ফিরিয়ে দলটিকে থামান আমির। ৩০ রানে ৫ উইকেট নেন বাঁহাতি এই পেসার।
৩০ রানে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের আগের সর্বোচ্চ ৩১০ পর্যন্ত যেতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। রান তাড়ায় ফখর জামান শূন্য রানে ফেরার পর থিতু হয়ে আউট হন বড় ভরসা বাবর আজম। তৃতীয় উইকেটে ইমাম ও হাফিজের ৮০ রানের জুটিতে ম্যাচে ফিরে পাকিস্তান। ২ উইকেটে ১৩৬ রানের দৃঢ় ভিতের ওপর থাকা দলটি দিক হারায় ছোট এক ধসে। ২৪ রানের মধ্যে দুই থিতু ব্যাটসম্যানের সঙ্গে শোয়েব মালিক ও আসিফ আলিও বিদায় নেন।
ক্রিজে গিয়েই চড়াও হওয়া হাসান আলিকে থামান আসরে প্রথমবারের মতো মাঠে নামা কেন রিচার্ডসন। অষ্টম উইকেটে ওয়াহাবের সঙ্গে সরফরাজের ৬৪ রানের জুটিতে নতুন করে আশা জাগে পাকিস্তানের। স্টার্কের বলে কট বিহাইন্ডের রিভিউ নিয়ে ওয়াহাবকে ফিরিয়ে বিপজ্জনক জুটি ভাঙে অস্ট্রেলিয়া। তিন ছক্কা ও দুই চারে ৪৫ রান করেন ওয়াহাব। এরপর বেশি দূর এগোয়নি পাকিস্তানের ইনিংস।
বিশ্বকাপে কখনও তিনশ ছাড়ানো রান করে জিততে পারেনি পাকিস্তান। এবার সম্ভাবনা জাগানো দলটিকে আগেই থামানোয় বড় অবদান প্যাট কামিন্সের। ৩৩ রানে ৩ উইকেট নেন গতিময় এই পেসার। দুটি করে উইকেট নেন স্টার্ক ও রিচার্ডসন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ৪৯ ওভারে ৩০৭ (ফিঞ্চ ৮২, ওয়ার্নার ১০৭, স্মিথ ১০, ম্যাক্সওয়েল ২০, মার্শ ২৩, খাওয়াজা ১৮, কেয়ারি ২০, কোল্টার-নাইল ২, কামিন্স ২, স্টার্ক ৩, রিচার্ডসন ১*; আমির ১০-২-৩০-৫, আফ্রিদি ১০-০-৭০-২, হাসান ১০-০-৬৭-১, ওয়াহাব ৮-০-৪৪-১, হাফিজ ৭-০-৬০-১, মালিক ৪-০-২৬-০)
পাকিস্তান: ৪৫.৪ ওভারে ২৬৬ (ইমাম ৫৩, ফখর ০, বাবর ৩০, হাফিজ ৪৬, সরফরাজ ৪০, মালিক ০, আসিফ ৫, হাসান ৩২, ওয়াহাব ৪৫, আমির ০, আফ্রিদি ১*; কামিন্স ১০-০-৩৩-৩, স্টার্ক ৯-১-৪৩-২, রিচার্ডসন ৮.৪-০-৬২-২, কোল্টার-নাইল ৯-০-৫৩-১, ম্যাক্সওয়েল ৭-০-৫৮-০, ফিঞ্চ ২-০-১৩-১)
ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার