ডিএমপি নিউজঃ জনসাধারণের সেবা শতভাগ নিশ্চিত করে জননিরাপত্তা বিধানে সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকার করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল এ কে এম শহীদুল হক বিপিএম, পিপিএম।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে আজ ২০ জুলাই’১৭ বিকাল সাড়ে ৩ টায় আয়োজিত বিশেষ অপরাধ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ডিএমপি’র সকল সদস্যের প্রতি এ আহবান জানান আইজিপি। এ সময় উক্ত বিশেষ অপরাধ সভার সভাপতিত্ব করেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম। ডিএমপি’র ইন্সপেক্টর থেকে তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শুরুতেই ডিএমপি কমিশনার কর্তৃক রচিত কর্ম বন্টন নামক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন আইজিপি।
যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণ পদ রায় প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ডিএমপি’র সার্বিক কর্মকান্ড বিশেষ অপরাধ সভায় তুলে ধরেন। এসময় তিনি ডিএমপি’র অপরাধ চিত্র, মামলার পরিসংখ্যান, গ্রেফতারকৃতদের সংখ্যা, বিট পুলিশিং, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, প্রসিকিউশন, কাউন্টার টেরোরিজমের কর্মকান্ড, পরিবহন ও লজিস্টিক বিভাগের কাজ, অর্থ বিভাগের বেতন ভাতা প্রদানের সফটওয়ার, কল্যাণ ফান্ড, ডিএমপি’র শিক্ষাবৃত্তি, ডিএমপি নিউজ পোর্টাল এর সাফল্য, ডিএমপি’র ফেসবুক, ইউটিউব, ওয়েবসাইটসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। প্রেজেন্টেশনে উঠে আসে ডিএমপি’র বিভিন্ন অগ্রগতির চিত্র যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য গত বছরের তুলনায় এই বছর মামলায় সাজার হার বৃদ্ধি (গত বছর জানুযারি- জুন মাসের মামলার সাজার হার ২৭.৬৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৭ সালের জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত সাজার হার বৃদ্ধি হয়েছে ৩৭.৬৬ শতাংশ ) , ট্রাফিকের ভিডিও মামলার হার বৃদ্ধি ( গত বছরের জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৯৯৭টি মামলা থেকে ২০১৭ সালের জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে ৯৮৩৫ টি মামলা হয়েছে), কল্যাণ তহবিল হতে অনুদান বৃদ্ধি । এছাড়াও আছে CIMS ডাটাবেজে এ পর্যন্ত ১৭৭৫৪৩১ টি ফরম এন্ট্রির সার সংক্ষেপ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি বলেন- প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ডিএমপি’র সামগ্রিক কর্মযজ্ঞ দেখতে পেয়ে আমি সন্তুষ্ঠ। ডিএমপি বাংলাদেশ পুলিশের সবচেয়ে বড় ও লিডিং ইউনিট। ডিএমপি’র উপর অনেকটা নির্ভর করে আমাদের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি ভালো না খারাপ। বিগত দিনে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অনুষ্ঠানে ডিএমপি’র গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিদেশী অতিথিরা ভূয়ষী প্রশংসা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী যেমন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। একই ভাবে আমরাও পুলিশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। মাদক বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে বলেন। ডিএমপি’র অর্জন যাতে ম্লান না হয় সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতে বলেন।
তিনি আরও বলেন- মানুষ যাতে হয়রানি না হয় তা শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। তদন্তের ক্ষেত্রে শতভাগ পেশাদারিত্বের ও সততার সাথে কাজ করতে হবে। মামলা তদন্তে কোন নিরীহ মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। থানায় কোন অবস্থায় ওয়ারেন্ট দীর্ঘদিন ধরে রাখা যাবে না। ওয়ারেন্ট আসার সাথে সাথে তা তামিলের চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। বর্তমান সময়ে CIMS একটি যুগান্তরকারী সিদ্ধান্ত হয়েছে। যার ফলে ঢাকা শহরে জঙ্গিরা থাকতে পারছে না। এজন্য ডিএমপিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান আইজিপি।
সভাপতির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন- আইজিপি মহোদয় যে নির্দেশনা আমাদের দিয়েছেন তা পালনে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবো। ডিএমপিতে জনহয়রানি অনেকাংশে কমে গেছে। থানার সেবার মান অতীতের তুলনায় বহুগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। জন হয়রানিকে একেবারে শূন্যের কোটায় আনতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের সকল বিভাগের ঈর্শ্বনীয় সাফল্য রয়েছে। ফোর্সের ডিউটি মনিটরিং করার জন্য আমাদের সিনিয়র অফিসাররা সবসময় মাঠে থেকে কাজ করছে। ফোর্সের কল্যাণে আমরা সবসময় কাজ করে যাচ্ছি।
কমিশনার দৃঢ়কন্ঠে বলেন- বাংলাদেশে পুলিশের যেকোন ইউনিটের থেকে ডিএমপি’র স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা অনেক বেশি রয়েছে। আমাদের সকলের মধ্যে রয়েছে চমৎকার ভ্রাতৃত্ববোধ। যে কারও বিপদে আমরা যে যেখানে থাকি না কেনো খবর পেলে ছুটে আসি। এই চমৎকার সম্পর্কের মধ্যদিয়ে ‘টিম ডিএমপি’ কাজ করে যাচ্ছে।