ডিএমপি নিউজঃ আজ দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে হলি আর্টিসানে হামলার ঘটনায় রুজুকৃত মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের সাথে অনানুষ্ঠানিক মতবিনিময় করেন কাউন্টার টেরোরিজমের প্রধান মোঃ মনিরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
এ সময় তিনি বলেন, গত বছর ১ জুলাই হলি আর্টিসানে এক নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা হয়। সে হামলার পরে রুজুকৃত মামলার তদন্ত কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে। এই মামলার তদন্ত আরো আগেই অনেকটা শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। এ হামলার ঘটনার আসামী বাশারুজ্জামান চকলেট ও ছোট মিজান কিছুদিন আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুলিশের অভিযানে নিহত হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। আগে আমরা যেসব আসামী সনাক্ত করেছিলাম তার মধ্যে বেশ কয়েকজন ধরা পরেছে এবং বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। এছাড়াও সাগর নামের অপর এক আসামী পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, এ তদন্তকালে আমরা আরো কিছু আসামীর নাম পেয়েছি যারা বিভিন্ন পর্যায়ে জড়িত ছিল। যেমন অর্থের যোগান দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা নাম এসেছে তার নাম আকরাম হোসেন। সে পলাতক রয়েছে। আকরাম হোসেনই ১৫ আগস্ট’১৭ পান্থ পথে হোটেল ওলিওতে সংঘটিত ঘটনার অর্থদাতা এবং ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। ঐ হামলার মূল নির্দেশনা সেই দিয়েছিল। আকরাম হোসেন হলি আর্টিসানের হামলায়ও অর্থ দিয়েছে। তাকেও গ্রেফতার করার প্রচেষ্টা রয়েছে।
মনিরুল ইসলাম আরো জানান, বড় ধরনের হামলা করতে হবে এমন প্রারম্ভিক বৈঠকে পরিকল্পনাকারী হিসেবে আরো দুইজনের উপস্থিতির কথা তদন্তে এসেছে। যাদের পরবর্তী সময়ে তেমন বড় ভূমিকা না থাকলেও তারা পলাতক থেকে তাদেরকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। তাদের নাম রিপন ও খালিদ। তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যদি সহসাই তাদের গ্রেফতার করা না যায় তাহলে তাদেরকে পলাতক দেখিয়ে ডিসেম্বর’১৭ এর মধ্যে অভিযোগপত্র দাখিলের চেষ্টা করবো।
চার্জশিট দাখিলের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা আগেই বলেছি তদন্ত শেষ পর্যায়ে এই বিষয়ে কোন সংশয় নেই। যেহেতু নতুন কিছু আসামীর নাম এসেছে তাদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা চলছে। তাদেরকে গ্রেফতার করতে পারলে তাদের জবানবন্দি নেওয়া সম্ভব হবে। আর গ্রেফতার করতে না পারলেও আমরা মামলাটি তদন্তে বিলম্ব না করে এই বছরের মধ্যেই অর্থাৎ এ মাসের মধ্যে চার্জশিট দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
তিনি এ বিষয়ে আরো বলেন, এই ঘটনায় এই পযন্ত ৫ জনকে জীবিত গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে গ্রেফতারকৃত রাজীব গান্ধী ওরফে জাহাঙ্গীর আলম, রাশেদ ওরফে র্যাশ, রিগান ও সোহেল মাহফুজ বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ঘটনা সম্পর্কে জানে তানভির কাদেরীর ছেলে ও তার স্ত্রী সাক্ষী হিসেবে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে। এই ঘটনার মূল মাস্টার মাইন্ড তামিম চৌধুরী এবং তার সহযোগী সারোয়ার জাহান, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জাহিদ বিভিন্ন সময়ে পুলিশের অভিযানে নিহত হয়েছে।
হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি সাংবাদিকদের জানান, এরা মূলত চেয়েছিল আইএস এর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে। এই ধরনের একটি বড় হামলা করে আইএসের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাতে আইএস তাদেরকে কাজের স্বীকৃতি দেয় এবং তাদেরকে অংশ হিসেবে তাদের দলে নেয়। কিন্তু তদন্তে জানা গেছে এই হামলাটি আইএস নির্দেশিত নয়। মামলা তদন্তে আইএসের সাথে তাদের সরাসরি কোন সম্পর্ক রয়েছে এমন কিছুও তদন্তে পাওয়া যায় নি।