আগামী মার্চ মাস থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চালু করতে যাচ্ছে ‘অথারাইজড ইকোনমিক অপারেটর (এইও)’ পদ্ধতি। যা স্বল্প সময়ে ও কম খরচে আমদানি-রফতানি পণ্য খালাসে বিশেষ বাণিজ্য সুবিধা প্রদান করবে।
বাসস সূত্রে জানা যায়, এইও পাইলট প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিকভাবে দু’টি ওযুধ কোম্পানিকে (ইকোনমিক অপারেটর) এই সুবিধা দেয়া হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য খাতের শিল্প-প্রতিষ্ঠানের জন্যও এই সুবিধা দেয়া হবে।
এ বিষয়ে এনবিআরের এইও কমিটির প্রধান ও ঢাকা কাস্টমস হাউজের কমিশনার বলেন, আমদানি-রফতানিসহ বাণিজ্যিক কার্যক্রমে যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অতীত রেকর্ড ভালো, মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আনা ও শুল্ক ফাঁকিসহ অন্য কোনো অভিযোগ নেই এবং আর্থিক ও কারিগরিভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ ইকোনমিক অপারেটরকে এইও হিসেবে গন্য করা হবে।
তিনি জানান,এইও পদ্ধতি চালু করার জন্য শীঘ্রই ওযুধ কোম্পানিগুলোর কাছে আবেদন চেয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হবে। আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে থেকে বিশ্ব কাস্টমস সংস্থার (ডব্লিউসিও) নির্ধারিত মান ও শর্ত পূরণে সক্ষম এমন প্রতিষ্ঠানকে এইও ঘোষণা করা হবে।
আগামী মাসে অন্তত দু’টি প্রতিষ্ঠানকে এইও হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন,এইও হিসেবে স্বীকৃতি পেতে ইতোমধ্যে দু’টি ওষুধ কোম্পানি স্কয়ার ও বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এই দুই প্রতিষ্ঠান এইও’র স্বীকৃতি পেতে পারে বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত,এইও ঘোষিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আমদানি-রফতানি কার্যক্রমে বন্দর থেকে দ্রুত ও অপেক্ষাকৃত কম পরীক্ষায় পণ্য খালাসের সুবিধা পেয়ে থাকে। এছাড়া এসব প্রতিষ্ঠান ব্যাংক গ্যারান্টির বাধ্যবাধকতায় নমনীয়তা ও বাকিতে কার্যক্রম সম্পন্ন করার মতো সুবিধাও পাবে।
এইও পদ্ধতি চালু করার লক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগি সংস্থার (ইউএসএইড) আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় এনবিআর বর্তমানে এইও পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
এই কর্মকর্তা বলেন,এইও ঘোষিত প্রতিষ্ঠান দেশে পণ্য খালাসের ক্ষেত্রে যেমন সুবিধা পাবে-তেমনি অন্য দেশেও পণ্য খালাসে সবিধা পাবে। এতে তার জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ী হবে।
তিনি জানান,ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা করাই এইও পদ্ধতির মূল লক্ষ্য। দেশের ব্যবসাখাতের ব্যাপ্তি প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাওয়ায় কাস্টমকেও এই ক্রমবর্ধমান ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হচ্ছে। কাস্টমস্ আধুনিকায়নে কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় এইও পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে।
যেসব প্রতিষ্ঠান এইও হিসেবে ঘোষিত হবে,তাদের ব্যবসায়িক ব্র্যান্ডিংও বাড়বে বলে মনে করছে এনবিআর। কেননা, এর মাধ্যমে ওইসব প্রতিষ্ঠানকে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে যে,তারা নীতিমালা মেনে ব্যবসা করছেন। কর ফাঁকি দিচ্ছেন না, যা দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীমহলে তাদের বিশ্বাসযোগ্য করে তুলবে।