আফগান বধের পর ক্যারিবিয়ান বধ। বিশ্বকাপে পর পর দুটো ম্যাচে জয় অস্ট্রেলিয়ার। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে কুল্টার নাইলের বিশ্বকাপে রেকর্ড রান। আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে করলেন ৯২। সঙ্গে স্টিভ স্মিথের ৭৩ রান। আর বল হাতে অপ্রতিরোধ্য মিচেল স্টার্ক। একাই ৫ উইকেট নিয়ে গুঁড়িয়ে দিলেন ক্যারিবিয়ানদের। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৫ রানে হারাল অস্ট্রেলিয়া।
ম্যাচের শুরুটা দারুণ করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিন্তু শেষটা করল অস্ট্রেলিয়া৷ ম্যাচের শুরুতে অসি ইনিংসে ধস ধরিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান পেসাররা৷ আর ম্যাচের শেষে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বজ্ঞান ব্যাটিং অসিদের হাতে জয় তুলে দেয়৷ ২৮৯ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের৷ মাত্র ৩১ রানে দুই ক্যারিবিয়ান ওপেনারই ড্রেসিংরুমে ফেরেন৷ এভিন লুইস ১ এবং ক্রিস গেইল ২১ রান করে আউট হন৷ কিন্তু তৃতীয় উইকেটে হোপ-পুরনের ৬৮ রানের পার্টনারশিপে লড়াইয়ে ফেরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷
৬৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন হোপ৷ মন্থর ইনিংস হলেও দলের জন্য হোপের এই ব্যাটিং ছিল অপরিহার্য৷ ১০৫ বলের ইনিংসে মাত্র সাতটি বাউন্ডারি মারেন হোপ৷ তবে ৩৬ বলে ৪০ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন পুরান৷ এর পর দলের হাল ধরেন ক্যাপ্টেন জেসন হোল্ডার৷ তাঁর অনবদ্য হাফ-সেঞ্চুরিতে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুর করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷ কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি৷ ৪৬ ওভারে মিচেল স্টার্কের জোড়া উইকেটে ক্যারিবিয়ান ইনিংসের কফিন শেষ পেরেক পুঁতে দেন৷ ৯ উইকেটে ২৭৩ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷
ব্যক্তিগত ৫১ রান করে হোল্ডার ড্রেসিংরুমে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে ক্যারিবিয়ানদের আশা শেষ হয়ে যায়৷ এর আগে আন্দ্রে রাসেল ও ব্রাথওয়েট উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে এসে অসিদের ম্যাচে ফেরার রাস্তা করে দেন৷ স্টার্কের বোলিং দাপটে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় জয় অসিদের৷ ১০ ওভারে ৪৬ রান খরচ করে ৫ উইকেট তুলে নেন স্টার্ক৷
এদিন টস জিতে ট্রেন্ট ব্রিজের বাউন্সি পিচে প্রথমে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। ম্যাচের শুরুতে অধিনায়কের সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা রাখেন ক্যারিবিয়ান পেসাররা৷ তৃতীয় ওভারেই ক্যাপ্টেন অ্যারন ফিঞ্চকে ড্রেসিংরুমে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম ধাক্কা দেন ওসানে থমাস৷ মাত্র ৬ রান করে ড্রেসিংরুমে ফেরেন অসি অধিনায়ক৷ চতুর্থ ওভারে ফর্মে থাকা ওয়ার্নারকে তুলে নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে বড় ধাক্কা দেন কটরেল৷ এদিন মাত্র ৩ রান করে আউট হন প্রথম ম্যাচ আফগানদের বিরুদ্ধে ৮৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলা বাঁ-হাতি অসি ওপেনার৷
বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচেও ক্যারিবিয়ান পেস ব্যাটারির দাপট ছিল অব্যাহত৷ ট্রেন্ট ব্রিজে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে ক্যারিবিয়ান পেসারদের দাপটে মাত্র ১০৫ রানে অল-আউট হয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান৷ ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসারদের বাউন্সারের সামনে অসহায় আত্মসমপর্ণ করেছিলেন পাক ব্যাটসম্যানরা৷ এদিনও অসি টপ-অর্ডারে থাবা বসান ক্যারিবিয়ান পেসাররা৷ মাত্র ৭৯ রানে পাঁচ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া৷ ড্রেসিংরুমে ফিরে যান ফিঞ্চ, ওয়ার্নার, খোয়াজা, ম্যাক্সওয়েল ও স্টওনিস৷
কিন্তু তার পরও দলকে ২৮৮ রানে পৌঁছে দেন কুলটার-লাইন ও স্মিথের অনবদ্য লড়াই৷ আফগানদের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ রান না-পেলেও এদিন ক্যারিবিয়ান পেসারদের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই করে ৭৩ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন প্রাক্তন অসি অধিনায়ক৷ ১০৩ বলের ইনিংসে মাত্র ৭টি বাউন্ডারি মারেন স্মিথ৷ তাঁর সঙ্গে প্রথমে ক্যারি ও পরে কুলটার-নাইল বড় পার্টনারশিপ গড়ে বিপর্যয় কাটিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে বড় রানে পৌঁছে দেন৷ ষষ্ঠ উইকেটে স্মিথ ও ক্যারি ৬৮ এবং সপ্তম উইকেটে ১০২ রানের পার্টনারশিপ গড়েন স্মিথ ও কুলটার-নাইল৷