রক্তাক্ত সুদান৷ ৩০ বছরের একনায়ক শাসক ওমর আল বশিরের পতনের পর থেকেই গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দেশটিতে৷ বিবিসি, এএফপি, আল জারিরা সহ সব আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের সর্বশেষ খবর- আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্যপদ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে সুদানকে৷ রাজধানী শহর খার্টুমের রাস্তায় রাস্তায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে উত্তেজিত জনতার সংঘর্ষ ছড়াচ্ছে আরও দ্রুত৷ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতের সংখ্যা শতাধিক৷ ইতিমধ্যে ৪০ জনের মৃতদেহ নীল নদের জল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে৷ এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা৷
সুদানের পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত আন্তর্জাতিক মহল৷ আফ্রিকার এই দেশটি মূলত মুসলিম অধ্যুষিত৷ তবে দেশটির দক্ষিণ অংশ অর্থাৎ দক্ষিণ সুদান ২০১১ সালে পৃথক হয়ে যায়৷ লাগাতার গৃহযুদ্ধে এই দেশটিও রক্তাক্ত৷
বিবিসি জানাচ্ছে, প্রবল গণ বিক্ষোভের চাপে গত ১১ এপ্রিল ৩০ বছরের স্বৈরশাসক ওমর আল বশিরকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে সুদানের ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এরপর তারা দু বছরের জন্য ক্ষমতায় থাকবে বলে জানায়৷ এই সময়ের মধ্যে নতুন করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে বলে জানানো হয়৷ কিন্তু, সুদানি জনগণ তা মানতে চায়নি৷ তারা দ্রুত গণতন্ত্রের দাবিতে এবার সেনার বিরুদ্ধেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন৷ সেনা সদর দফতরের সামনে শুরু হয় অবস্থান৷ সেই পরিস্থিতিতে গত ৩ জুন ভোরে জনতা-সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হয়৷ অভিযোগ বিক্ষোভ ও আন্দোলন থামাতে দেশটির র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ) নির্বিচারে গুলি চালায়৷ এতেই বহু মানুষের মৃত্যু হয়৷
রয়টার্স ও আল জাজিরার রিপোর্টে বলা হয়েছে রাজধানী খার্টুমের রাস্তায় রাস্তায় শুরু হয়েছে সেনা-জনতার সংঘর্ষ প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা৷ সুদানের কেন্দ্রীয় চিকিৎসক কমিটি ইতিমধ্যেই ১০৮ জনের মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করেছে৷ তাদের দাবি, নীল নদের জলে আরও দেহ ভাসতে দেখা গিয়েছে৷ তবে আরএসএফ বাহিনীর নেতা ও ক্ষমতাসীন ট্রানজিশনাল মিলিটারি কাউন্সিলের (টিএমসি) চেয়ারম্যান লে. জেনারেল মহম্মদ হামদান এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।
সবমিলে তীব্র রাজনৈতিক উত্তাপে আফ্রিকার দেশ সুদান ফুটছে৷ সেই উত্তাপ ছড়িয়েছে বিভিন্ন দেশেও৷ আর প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবা থেকে আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা সুদানের রাজনৈতিক গতি প্রকৃতি লক্ষ্য করছেন৷ সুদানে থাকা বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷